আমাদের দেশে সাধারণত গোল্লা, গিরিবাজ, হোমার এবং ফেন্সি প্রজাতির কবুতর বেশি পালা হয়। গোল্লা প্রজাতির কবুতর আবার দুই ধরনের-দেশি গোল্লা ও বোম্বাই গোল্লা। দেশি গোল্লারও রয়েছে রকমফের। যেমন-লাল গোল্লা, সাদা গোল্লা, কালো গোল্লা ইত্যাদি। এ প্রজাতির কবুতর বেশি উড়তে পারে না। এ কবুতর সাধারণত বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রির জন্য পালন করা হয়। গিরিবাজ কবুতর প্রায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে।
এ প্রজাতির মধ্যে সবুজ গোল্লা, গররা, মুসলদম, কালদম, বাগা, চুইনা, লাল চিলা, খয়েরি চিলা, ঘিয়া ছুলালি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কিছুু গিরিবাজ কবুতরকে প্রতিযোগিতার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এদের বলে রোলার রেসার। প্রতিযোগিতার জন্য বহুল পরিচিত হোমার কবুতর।
হোমার প্রজাতির বিভিন্ন কবুতরের মধ্যে আছে ব্ল্যাক হোমার, হোয়াইট হোমার, রেড চেকার, মিলি, মাকসি, সবজি ইত্যাদি। এসব হোমার কবুতর হাজার কিলোমিটার বা এর চেয়ে বেশি দূরত্ব উড়তে পারে। শৌখিন প্রজাতির কবুতর ফেন্সি। এ প্রজাতির কবুতরের মধ্যে রয়েছে লক্ষ্যা, প্রিন্স, বল, সুয়া চন্দন, সুইট, কিং সিরাজী, নোটন পায়রা ইত্যাদি। এ প্রজাতির কবুতর সাধারণত শখ করে পোষা হয় বলে এদের শৌখিন কবুতর বলা হয়। এরা বেশি দূর উড়তে পারে না। আবার রেসের জন্য কবুতরকে বাচ্চা বয়স থেকেই আলাদাভাবে যত্ন নিতে হয়। রেসিংয়ের জন্য নির্বাচিত কবুতরকে জšে§র চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই পায়ে একটি ট্যাগ রিং পরানো হয়-যেখানে থাকে একটি কোড নম্বর, জন্মসাল এবং দেশের কোড নম্বর। কবুতরটির বয়স দুই থেকে তিন মাস হলেই পরিবার থেকে আলাদা করে ভিন্ন খাঁচায় রাখা হয়। চার মাস বয়স হলে আবারো খাঁচা পরিবর্তন করা হয়। এবার খাঁচা থাকে ঘরের বাইরে।
এ সময় কবুতরটি তার বাসস্থান ও পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পায়। এভাবে রেসার কবুতর উড়তে শেখে এবং ধীরে ধীরে ওড়ার বেগ ও দূরত্ব বাড়তে থাকে। প্রতি শুক্রবার গুলিস্তানের কাপ্তানবাজারে কবুতর এবং কবুতরের খাবারের বিশাল হাট বসে। এখানে দেশি-বিদেশি প্রায় সব ধরনের কবুতর পাওয়া যায়। এছাড়া জিঞ্জিরায় শুক্রবার, ঢাকার পাগলায় শনিবার হাট বসে। কাপ্তানবাজার এবং কাঁটাবনে কিছু স্থায়ী দোকান আছে, যেখানে সারাসপ্তাহ কবুতর ও খাবার পাওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment