ক্যারিয়ারের সম্মানজনক অবস্থানে দাঁড়িয়ে একটা সুখের নীড় গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন না, এমন মানুষ খুঁজে বের করা দায়। ছাত্রজীবন থেকেই প্রত্যেকে এই স্বপ্ন নিজের মাঝে লালন করে থাকে। কিন্তু পরিকল্পনানুযায়ী প্রস্তুতি না থাকার কারণে অনেক সময় অনেকেরই সে স্বপ্ন হাতের মুঠো থেকে খুব সহজেই ফসকে যায়।
পরিকল্পনা করা অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন। ব্যক্তিগত ও সামাজিক চাহিদা, অবস্থান, সামর্থ্য এবং রুচিবোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে। এ জন্য আপনি কিছু সহজ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন। পরিকল্পনার ক্ষেত্রে চারটি বিষয় এ ক্ষেত্রে থাকা উচিত। যথা: লক্ষ্য অনুযায়ী সিদ্ধান্ত, সঠিক কাজ, সময় এবং প্রচেষ্টা। জীবনে সিদ্ধান্ত নেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিদ্ধান্ত বলতে একটি কাজ করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে সেটি থেকে বিকল্প বা কোনো একটি বিষয় বেছে নেয়াকে বুঝায়। আর সিদ্ধান্ত সঠিক হওয়ার ওপর সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করে। সিদ্ধান্ত শেষে আপনাকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সময়কে গুরুত্ব দিয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
তোমার জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ স্কুলে এই বিষয়ে রচনা লেখেননি এমন শিক্ষার্থী কমই আছে। মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ আবার শিক্ষক ইত্যাদি। শখ অনুযায়ী এই কিশোর বয়স থেকে শুরু করা উচিত ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। কারণ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার আসল সময় এই বয়সটাই। যদি প্রস্তুতিটি সঠিক হয় তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনাটির বাস্তব রূপদান সম্ভব। আর সেটা সম্ভব আমাদের প্রচেষ্টা, ইচ্ছা, আগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতার ওপরই। তবে এ ক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত সামর্থ্য, দক্ষতা, আগ্রহ, রুচি, উৎসাহ, মূল্যবোধ, স্বপ্ন এবং গুণাবলিকে প্রাধান্য দিতে হবে। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা।
যে কাজকে জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নেব এবং তার মাধ্যমে উপার্জন করে জীবনযাপন করব সেটাই পেশা। আর পেশা নিয়ে পরিকল্পনা বলতে যে পেশার মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করবেন সে বিষয়ে পরিকল্পনা করাকে বোঝায়। কেননা বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে পড়াশোনা শেষে চাকরির নিশ্চয়তা রয়েছে এমন চিন্তা করা বোকামি। কারণ চাকরি পেতে হলে আপনাকে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতেই হবে।
আর এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে দরকার যোগ্যতার। এ জন্য ক্যারিয়ার হিসেবে আপনি কোনটিকে বেছে নেবেন, কোনো পেশার জন্য কী রকম প্রস্তুতি নিতে হবে, আপনার ইচ্ছাধীন পেশায় যাওয়ার রাস্তাটা কেমন হবে বিষয়গুলো জানতে অবশ্যই পেশা পরিকল্পনা প্রয়োজন।
চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিনঅতীতাকে যেমন একেবারেই গুরুত্বহীন মনে করা যাবে না, তেমনি খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে ক্ষতি ডেকে আনা যাবে না। বর্তমানকে যথাযথ মূল্যায়ন করে ভবিষ্যতের সফলতা লাভের প্রচেষ্টা চালানোতেই লুক্কায়িত রয়েছে সত্যিকারের বীরত্ব। যারা বর্তমানকে উপভোগ করতে পারেন না, ভবিষ্যতের সোনালি স্বপ্ন দেখতেও ভুলে যান তাদের অমঙ্গলই হয় বেশি। নিজের অবস্থান ও সামর্থ্যরে ব্যাপারে সচেতন থেকেই পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নিতে হয়। শুধু উপরে দেখা কিংবা শুধুই নিচে দেখার মাঝে লাভ নয়, বরং ক্ষতিই বেশি। নিজের ব্যাপারে পরিপূর্ণ সচেতনতাই সামনে এগিয়ে নিতে পারে। অনেকগুলো বিকল্প যখন একসঙ্গে সামনে আসে, তার মধ্য থেকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য, উপযুক্ত বিকল্পটি বেছে নেয়ার নাম সিদ্ধান্ত। জীবনের প্রত্যেকটি পদে, এমন হাজার বার আমাদের বিকল্প বেছে নিতে হচ্ছে। কখনো আমরা সঠিকটা নিতে পারি, কখনো হয়ে যায় ভুল। হয়তো আপনি যে সিদ্ধান্তটা ভালো বুঝবেন, কিন্তু তা গ্রহণ করতে পারছেন না এমনটিও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী যেটি ওই সময়ের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর সেটি বেছে নিন। সেটিই হতে পারে আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত। কাজেই সততা ও সাফল্যের সঙ্গে নিজ অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করতে সঠিক সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
নিজের মতের ওপর স্থির থাকা ভালো, যদি সে মত সঠিক হয়। পাহাড়, পর্বত, বৃক্ষরাজি শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্থির অস্তিত্বের দৃষ্টান্ত হিসেবে। স্থিরতাতেই কল্যাণ। ঘন ঘন মতো বদলানো বোকামি। খড়কুটোই শুধুমাত্র উদ্দেশ্যহীনভাবে ভেসে চলে। তাই উদ্দেশ্য সুনির্দিষ্টকরণ এবং সিদ্ধান্তে অটল অবিচল থাকতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে, কঠিন প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা অযৌক্তিক। কথা কম বলা মন্দ নয়। তাই বলে পরামর্শবিহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা প্রয়োজনেও মুখ না খোলার অভ্যাসকে তো কিছুতেই ভালো বলতে পারি না। তবে অতিরিক্ত কথা বলার অর্থই চিন্তা কম করা, যা কম বুদ্ধিমানেরাই করে থাকে। যে ক্ষুদ্র চিন্তা করে তার কাছ থেকে কিছু আশা করা যায় না। আবার যে বড় চিন্তা করবে এবং চিন্তার আলোকে কর্মপ্রচেষ্টা চালাবে, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যপানে ছুটবে সে ছোট থাকবে এটাও যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। চিন্তা কোনো মাপের কোনো পর্যায়ের সেটি নির্ণয় করতে পারলেই কোনো মাপের মানুষ সেটি বুঝা অনেকটা সহজ হবে। ইচ্ছের শেষ নেই। সব ইচ্ছা পূরণ হওয়ার নয়। ইচ্ছে অপূরণ থাকে বলেই মানুষ আরো বেঁচে থাকতে চায়।
বাড়িয়ে তুলুন জ্ঞানের পরিধিসাধারণ জ্ঞানের জন্য আলাদাভাবে পড়াশোনা করতে হবে। বই পড়েও সাধারণ জ্ঞানের ওপর দখল নেয়া যায়। লিখেছেন নাজমুল হক ইমন
কলেজপড়–য়া তানিন সব সময়ই ব্যস্ত থাকে তার পাঠ্যবই নিয়ে, পাশের বাড়িতে বোমা ফাটলেও তার সেদিকে খেয়াল নেই। সারাদিন তার চোখ দুটি ঘুরে পাঠ্যবইয়ের পাতায় পাতায়। তার পুরো জীবনটাকেই সে বন্দি করে ফেলেছে তার পাঠ্যবইয়ের মাঝে। বাস্তবতার সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ তার নেই। যদি জিজ্ঞেস করা হয়, জাতীয় জাদুঘর কোথায়? সে বলবে, এইটা তো বইয়ে ছিল না। অথচ তার বাসা থেকে জাদুঘর মাত্র দশ মিনিটের রাস্তা। সবমিলিয়ে এ যুগে টিকে থাকতে হলে জ্ঞানের পরিধিকে বাড়াতে হবে। সাধারণ জ্ঞানে যার যত বেশি দখল, চাকরির বাজারে তার তত বেশি গ্রহণযোগ্যতা। জীবনের প্রায় সব পরীক্ষায়ই শুরু হয় মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে। পাঠ্যবিষয়সংক্রান্ত প্রশ্ন থাকে এ কথা ঠিক, কিন্তু অনেক পরীক্ষায় এসব বিষয়ের চেয়ে সাধারণ জ্ঞানই বেশি থাকে। সাধারণ জ্ঞানের দুটি অংশ থাকে। একটি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ, অন্যটি আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ। বাংলাদেশ প্রসঙ্গের জন্য সমসাময়িক পত্রিকাগুলো পড়লে যথেষ্ট কাজ দেবে। আর প্রায় প্রতিটি পত্রপত্রিকায়ই আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। এছাড়া প্রায় প্রতিটি জাতীয় সংবাদপত্রেই আন্তর্জাতিকবিষয়ক পাতা থাকে। সাপ্তাহিক ফিচার পাতাও প্রকাশ করে অনেক জাতীয় দৈনিক।
সাধারণ জ্ঞানের জন্য আলাদাভাবে পড়াশোনা করতে হবে। বই পড়ে সাধারণ জ্ঞানের ওপর ভালো দখল নেয়া যায়। যে যত বেশি পড়বে, সে তত বেশি সাধারণ জ্ঞানের অধিকারী হবে। বাজারে সাধারণ জ্ঞানের অসংখ্য বই কিনতে পাওয়া যায়। এসব বই থেকে আপনার প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহ করে নিতে পারেন। বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার জন্য আলাদা বইও প্রকাশ করা হয়। এসব বই কিনেও পড়তে পারেন। তবে সব চাকরির পরীক্ষায়ই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন সাধারণত একই ধরনের হয়ে থাকে। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেই অন্যসব চাকরির সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষার প্রস্তুতি অনেকটাই হয়ে যায়। এবার জেনে নেয়া যাক কিছু সাধারণ জ্ঞানের বইয়ের খোঁজখবর।
চাকরির প্রার্থীদের কথা মাথায় রেখে অনেক প্রকাশনা সংস্থা সাধারণ জ্ঞানের বই প্রকাশ করে থাকে। প্রফেসরস প্রকাশন সমকালীন বিশ্ব, তথ্যকোষ, মেধাবী : বাংলাদেশ ও নতুন বিশ্ব, প্রফেসরস জব সলিউশন, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যালবামসহ বেশকিছু সাধারণ জ্ঞানের বই প্রকাশ করেছে। বিসিএস প্রকাশন থেকে চলতি বিশ্ব, নলেজ ওয়ার্ল্ড, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড অ্যালবাম প্রভৃতি বই প্রকাশিত হয়েছে। কারেন্ট পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত চলমান বিশ্ব, কারেন্ট সাধারণ জ্ঞান অ্যালবাম ও জব প্রিপারেশন শিরোনামের বই বের করে। এসব বই বেছে নিতে পারেন।
কর্মক্ষেত্রে বন্ধুত্বক্যারিয়ার
বন্ধু শব্দটা সত্যিই কেমন যেন আপন মনে হয়। মনে হয় খুব কাছের কেউ, যার
পাশাপাশি পথ চলে কাটিয়ে দেয়া যায় বছরের পর বছর। বন্ধু ছাড়া স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কেউ পার হয়নি-একথা সবাই জানে। কাছের হোক বা দূরের হোক, বন্ধু বন্ধুই। চাকরি ক্ষেত্রেও বন্ধুত্বের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। লিখেছেন নাজমুল হক ইমন
ক্যারিয়ারে আপনার মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বন্ধুত্ব খুবই প্রয়োজন। পড়াশোনা শেষ হয়েছে সেই কবে। বহু প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ দিয়েও চাকরি হচ্ছে না। তাই বলে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কারণ স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রচুর বন্ধু-বান্ধবী ছিল আপনার। আর পাড়া বা মহল্লার বন্ধুরা তো আছেই। তাদের খোঁজ নিতে দোষ কী! তারা অনেকেই হয়ত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে আছেন। দীর্ঘদিন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে দ্বিধা করার কোনো কারণ নেই। এটা কর্পোরেট যুগ। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো এখন আর শুধু সিভি দেখে না। ইন্টারভিউয়ের চেয়ে যোগাযোগটাই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মামা-চাচার যোগাযোগ না। এটি জব নেটওয়ার্কিং সিস্টেম, যেখানে সুপারিশের জন্য কাছের বন্ধুটিই যথেষ্ট। কোম্পানিগুলো এখন একজন দক্ষ কর্মচারীর মাধ্যমে আরেকজনকে নেয়। অতএব ঘনিষ্ঠ বন্ধুটিকে অবহেলা করা উচিত নয়। বর্তমান সময়ে চাকরি খোঁজার আগে বন্ধু খোঁজা প্রয়োজন। তাহলেই পথটা সহজ হয়ে যায়। অনেক সময় বন্ধু হয়তো সরাসরি কিছু করতে পারে না । অন্য কাউকে অনুরোধ করে। তাতে কী, কাজটা তো হলো। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক জরিপে পাওয়া গেছে মজার তথ্য। চাকরি খুঁজছেন, এমন ৩৫১ জনের ওপর চালানো হয়েছিল জরিপটা। তাতে দেখা গেছে, শতকরা ৬০ ভাগই চাকরি পেয়েছেন তাদের বন্ধু, সাবেক সহপাঠী বা সহকর্মীর মাধ্যমে, ১৭ ভাগ এজেন্সির মাধ্যমে, আর মাত্র ১৫ ভাগ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে, ইন্টারভিউ দিয়ে।
মানসিকতাটাই আসল, অন্তত স্বাধীন ব্যবসার ক্ষেত্রে। বুটিকের দোকান, ফাস্টফুড, বায়িং হাউস, ফ্যাশন হাউস থেকে শুরু করে এক্সিবিশন পর্যন্ত আজকাল বন্ধুরা মিলে করছে। অতএব আপনাকেও প্রচেষ্টা চালাতে হবে অন্তত ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য ভালো কিছু তো করতে হবে। বন্ধুটি যদি আপনার কলিগ হয়, তাহলে সে নানাভাবে উপকারে আসতে পারে। অনেক এক্সিকিউটিভের মতে, কাজের জায়গাটি হতে হবে পরিবারের মতো, বন্ধুত্বপূর্ণ। এতে কাজের গতি বাড়ে, আনন্দ আসে, কাজ বেশি হয়। উৎপাদন ও টিমওয়ার্কে এর বিরাট প্রভাব পড়ে। সব কিছু মিলিয়েই গড়ে ওঠে একটি কর্পোরেট ফ্যামিলি। তবে কর্মক্ষেত্রে বন্ধুত্ব খুব গভীর না হওয়াই ভালো। একটা না দেখা দূরত্ব মেনে চলতেই হবে। ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোকে কাজের জায়গায় টেনে না আনাই ভালো। আপনার স্ত্রীও আপনার কলিগ হতে পারে। তবে কাজের ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়তে দেয়া যাবে না। কর্মক্ষেত্রে বন্ধুত্ব আর ব্যক্তিজীবনে বন্ধুত্ব গুলিয়ে ফেলা যাবে না
জুনিয়র বন্ধুরা কখনো কখনো বিপদের কারণ হতে পারে। একটু অসাবধানতার দরুন আপনাকে পড়তে হতে পারে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। সিনিয়ররাও কিন্তু কম যান না।
লেগে থাকুন নাছোড়বান্দার মতোচাকরি ক্ষেত্রে প্রমোশন কিংবা ব্যবসায় উন্নতির ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক বাধা বিপত্তিকে টপকাতে হবে এতে কোনো কিছু চিন্তা করারই অবকাশ নেই। আর আর্থিক উন্নতি ও প্রমোশনের ক্ষেত্রে সততা ও সহিষ্ণুতা থাকাটা জরুরি। হতে হবে সুযোগ সন্ধানীও। সুযোগ বারবার আসে না। তাই সুযোগ আসা মাত্র তা গ্রহণ করতে হবে। আপনি যে কাজ করবেন সে সিদ্ধান্তটা নেয়া হয়েছে। আপনাকে এবার আরো কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যেমন আপনি যা করছেন তা কি পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাবে? কাজটি কি আপনার ক্যারিয়ার গড়তে যথেষ্ট উপযোগী? এই প্রশ্নগুলোর যথোপযুক্ত জবাব বের করেই আপনাকে কাজে হাত দিতে হবে। অন্যথায়, আপনার কাজের ক্ষেত্রই আপনাকে সফলতা পেতে দিবে না। ব্যর্থতার সাগরে ডুবাবে।
আপনার বসের চাহিদামাফিক আপনাকে কাজ করতে হবে আর এটাই উচিত। তবে জানতে হবে আপনার কাছে তার চাহিদা কী? বা, কী করলে প্রতিষ্ঠান আরো উন্নত হতে পারবে, হতে পারবে লাভবান? প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার উচ্চাকাক্সক্ষার প্রমাণ দিতে হবে। আপনার প্রতিষ্ঠান আপনার সাফল্য সম্পর্কে জানবে। জানবে আপনার দক্ষতা, কর্মক্ষমতা, কর্মস্পৃহা, সততা ইত্যাদি সম্পর্কেও। এরপরও বাচনভঙ্গি, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি তো আছেই। তারপরই না পদোন্নতির প্রশ্ন। যদি নতুন অবস্থানে আপনার সমর্থ প্রমাণ করতে পারেন, তখনি কেবলমাত্র আপনাকে নতুন অবস্থানের জন্য স্থায়ীভাবে বহাল করবে। নতুন অবস্থানে আসার পর আপনাকে আপনার নিজের কাজকেও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। নিজেকে স্থির করে নিতে হবে-‘হ্যাঁ! আমি পারব’। আরো একটি বিষয়ে মনস্থির করতেই হবে যে আমি আমার সাফল্যের জন্য অতিরিক্ত সময়ও ব্যয় করতে পারব।
অনেকের ধারণা সকাল-সন্ধ্যা কাজ করলেই প্রমোশন পাওয়া যাবে। কিন্তু এই ধারণাটা ভুল। সকাল-সন্ধ্যা কাজ করলেই প্রমোশন পাওয়া যাবে না। প্রমোশন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কর্মদক্ষতা, বিচক্ষণতা, কর্মস্পৃহা, উন্নত ধারণা, নতুন নতুন কাজ করার মতো সাহস থাকতে হবে যা আপনার ঊর্র্ধ্বতনের নজর কাড়বে। তাছাড়া ঊর্ধ্বতন যেভাবে চায় তার পুরোটাই দিতে পারলে ভালো।
আপনার উচিত ঊর্ধ্বতনকে নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা জানানো। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন ব্যস্ত থাকে তখন অবশ্য এই কাজ করা ঠিক নয়। একটি ভালো সময় বিচার করেই আপনাকে কাজটি করতে হবে। সময়টা হতে পারে লাঞ্চের সময় কিংবা অফিস শেষে অথবা কোনো আনন্দঘন মুহূর্তে। মনে করেন আপনার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো ওয়েব সাইট নেই। আপনার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওযেব সাইট তৈরি করার জন্য আপনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনকে আহ্বান করলেন। ওয়েব সাইটটি তৈরি করতেও আপনি সাহায্য করলেন। এতে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনার প্রতি খুশি থাকবে।
No comments:
Post a Comment