Wednesday, October 31, 2012

বাড়িতেই হাঁসের খামারনতুন ব্যবসা

বাড়িতেই হাঁসের খামারনতুন ব্যবসা
হাঁসের থাকার জন্য এমনভাবে ঘর বানাতে হবে যেন আলো-বাতাস যাওয়া-আসা করতে পারে। ঘরের আশপাশে জলাধার থাকলে ভালো হয়। ১০০টি হাঁস নিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার হাঁসের খামার। ১০০টি হাঁসের খামার গড়তে ১৫টির বেশি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে শুরু করতে হবে। প্রজননের জন্য হাঁসের খামারে ১০:১ পরিমাণে হাঁস এবং হাঁসা রাখতে হবে। বড় হলে প্রয়োজনীয় হাঁস ও হাঁসা রেখে অন্যগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রথমে বাচ্চা এনে অন্তত সাত দিন সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় রাখতে হবে। এ জন্য শীতের সময় বেশি তাপ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইট দিয়ে ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে রাখা জরুরি। গরমের দিনে ঘর ঠাণ্ডা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে হাঁসগুলো থাকার জায়গায় ধানের তুষ অথবা কাঠের গুঁড়া দিয়ে বিছানা তৈরি করতে হবে। ঘরের আশপাশ পরিষ্কার করাটাও জরুরি। কারণ অপরিষ্কার জায়গা থেকে রোগ-জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে।
হাঁসের বিভিন্ন জাত আছে। তবে খামারের জন্য জিনডিং ও দেশি এ দুই ধরনের হাঁসই ভালো। এগুলো মাংস ও ডিম উৎপাদনে আমাদের আবহাওয়ার উপযোগী। জিনডিং হাঁস কষ্টসহিষ্ণু, এদের পালন পদ্ধতিও সহজ। এরা বছরে ২৫০ থেকে ২৭০টি ডিম দেয়। দেশি কালো জাতের হাঁস উচ্চ মাত্রায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। এগুলো বছরে ২০০ থেকে ২৩০টি ডিম দেয়। এদের মাংসও খুব সুস্বাদু।
হাঁস পালনে তেমন শ্রম দিতে হয় না। বাইরে ছেড়ে দিলে নিজেরাই খাবার সংগ্রহ করতে পারে। অতিরিক্ত খাদ্য চাহিদা মেটাতে চালের কুঁড়ার সঙ্গে ডাব্লিউ এস-এ, ডি, ই, বি-১, বি-২, বি-৬, বি-১২ ভিটামিনগুলো দেওয়া যেতে পারে। পাঁচ মাস পর থেকে হাঁসগুলো ডিম দেওয়া শুরু করবে। তিন বছর বয়স পর্যন্ত হাঁস পূর্ণ মাত্রায় ডিম দেয়। এরপর হাঁসগুলোকে বাজারে বিক্রি করে দিতে হবে, যার মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
প্রাথমিকভাবে লাভের জন্য তিন বছরের পরিকল্পনা নিয়ে খামার গড়তে হবে। ১০০টা হাঁসের জন্য বাঁশের একটি ঘর বানাতে এককালীন খরচ পড়বে ১৫ হাজার টাকা। ১১৫টি হাঁসের বাচ্চার দাম পড়বে এক হাজার ৩৮০ টাকা। কুঁড়াপ্রতি বস্তা পড়বে ২০০ টাকা, মাসে এক বস্তা করে কুঁড়া লাগবে। বছরে ১২ বস্তা, তিন বছরে ৩৬ বস্তা। ৩৬ বস্তা কুঁড়ার দাম পড়বে সাত হাজার ২০০ টাকা। ব্লিচিং পাউডার লাগবে মাসে পাঁচ কেজি। দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা হলে ৩৬ মাসে ব্লিচিং পাউডার লাগবে ১৮০ কেজি, যার দাম পড়বে ১০ হাজার ৮০০ টাকা। তুষ বা কাঠের গুঁড়া লাগবে চার মাস অন্তর চার বস্তা করে। এক বস্তা কাঠের গুঁড়ার দাম ৫০ টাকা। বছরে লাগবে ১২ বস্তা। তিন বছরে ৩৬ বস্তা কাঠের গুঁড়ার দাম পড়বে এক হাজার ৮০০ টাকা। ভ্যাকসিন লাগবে বছরে এক হাজার টাকা করে তিন বছরে তিন হাজার টাকার। আপৎকালীন সময়ের জন্য হয়তো লাগবে আরো ১০ হাজার ৮২০ টাকা। মোট খরচ তিন বছরে ৫০ হাজার টাকা।
বছরে হাঁস ডিম দেয় গড়ে ২৩০টি। ১০০টি হাঁসের ৯০টি হাঁস ডিম দিলে বছরে ডিম পাওয়া যাবে ২০ হাজার ৭০০টি। ৩০ টাকা হালি ধরে ২০ হাজার ৭০০টি ডিমের দাম এক লাখ ৫৫ হাজার ২৫০ টাকা। একটি হাঁস গড়ে দুই-তিন কেজি হয়।

No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...