Wednesday, October 31, 2012

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার জন্য

 পনেরো অধ্যায় : ছাগল পালন
(গত আলোচনার পর থেকে)
৮. ছাগল পরিচর্যার জন্য সর্বক্ষণ কোনো লোকের প্রয়োজন হয় না।
৯. অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় ছাগলের রোগবালাই কম হয়।
১০. ছাগল পালনে সরকারিভাবে সেবা সহায়তা পাওয়া যায়।
১১. সর্বোপরি, অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে এবং অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা আয়ের একটা সহজ উপায় হলো ছাগল পালন।
ওপরের সুবিধাগুলোর কারণেই বাড়তি আয়ের জন্য বাড়ির মহিলারা সাংসারিক কাজের ফাঁকে ছাগল পালন করে থাকেন। এতে সংসারের দুধ-মাংসের প্রয়োজনীয়তা মেটে। অপরদিকে ছাগলের মাংস, দুধ ও চামড়া বিক্রি করে সংসারের প্রয়োজনীয় অভাব মেটানো যায়।
প্রশ্ন : ২। ছাগলের দুধ বাড়ানোর জন্য কী কী ব্যবস্থা নেয়া যায় তা আলোচনা কর।
উত্তর : ছাগলের দুধ একটি পুষ্টিকর শিশুখাদ্য। ছাগলের দুধ সহজে হজম হয়, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ছাগলের দুধ বাড়ানোর জন্য নিুলিখিত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে :
১) প্রতিদিন ভোরে আধা কেজি খেসারির ডাল ভিজিয়ে রাখতে হবে। সন্ধ্যায় ওই ভেজানো ডাল ছাগলকে খাওয়াতে হবে। পরপর ৩-৪ দিন খাওয়ালে দুধের পরিমাণ বেড়ে যায়।
২) আধা কেজি পরিমাণ ভাতের মাড় সামান্য গরম অবস্থায় আধা কেজি চিটাগুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে রোজ সকাল ও দুপুরে খাওয়ালে ভালো সুফল পাওয়া যায়।
৩) কলার খোসা ও লাউ সিদ্ধ করে খাওয়ালে ছাগলের দুধ বেড়ে যায়। তবে দুধ একটু পাতলা হয়।
৪) এছাড়া কাঁটানটে ও কঁটি বেড়ির ডগা সিদ্ধ করে খাওয়ালে দুধের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব।
প্রশ্ন : ৩। ছাগলকে রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তা উল্লেখ কর।
উত্তর : অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় ছাগলের রোগব্যাধি কম হয়। তবে কিছু কিছু মারাত্মক সংক্রামক রোগ আছে যেগুলোর সময়মতো চিকিৎসা না করলে ছাগল মারা যায়। যেমন : তড়কা, ক্ষুরারোগ, ধনুষ্টংকার, রেবিস ইত্যাদি। এসব রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা ও ইনজেকশন আছে। তাছাড়া ছাগলের এসব রোগের লক্ষণ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশু ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। তবে আগে থেকে কিছু ব্যবস্থা নিলে ছাগলের রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। ছাগলের রোগ প্রতিরোধের জন্য নিুলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখলে সুফল পাওয়া যায়। যেমন :
১) পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন রোগের টিকা বা ইনজেকশনের ব্যবস্থা করা।
২) কৃমিরোগের জন্য পশু চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো।
৩) ছাগলকে পরিমিত সুষম খাবার খাওয়ানো।
৪) পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা।
৫) যকৃতের পাতাকৃমি একটা মারাত্মক রোগ। এ রোগের আক্রমণ থেকে ছাগলকে রক্ষা করা প্রয়োজন।
তেরো অধ্যায় : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
প্রশ্ন : ১। বিজ্ঞান কাকে বলে?
উত্তর : বিজ্ঞান শব্দের বিশ্লেষিত রূপ বি+জ্ঞান। ‘বি’ অর্থ বিশেষ আর ‘জ্ঞান’ অর্থ সম্যক ধারণা। সুতরাং বিজ্ঞান শব্দের অর্থ বিশেষ সম্যক ধারণা।
বিশ্বজগতের যাবতীয় কর্মকাণ্ড কোনো না কোনো কারণে সংঘটিত হয়। এসব কারণ অনুসন্ধানের জন্য মানুষ নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। ফলে অর্জিত হয় নতুন নতুন জ্ঞান। এ জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াই হলো বিজ্ঞান। বিজ্ঞান মানুষকে নতুন নতুন ধারণা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে আজকাল অনেক মারাত্মক রোগের চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে। কল কারখানার উন্নয়নের ফলে এখন অনেক স্বল্পসময়ে অনেক বেশি উৎপাদন সম্ভব। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে আজকাল খুব দ্রুত এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া যায়। এসবই বিজ্ঞানের ফলে সম্ভব হয়েছে।
প্রশ্ন : ২। প্রযুক্তি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আমাদের জীবন ও জীবিকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন করার জন্য বিজ্ঞানের জ্ঞানকে কাজে লাগানো অর্থাৎ বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে প্রয়োগ বা ব্যবহার করাকেই প্রযুক্তি বলা হয়।
প্রাচীনকালে মানুষ আগুনের ব্যবহার জানত না। বিজ্ঞান তাদের আগুনের ব্যবহার শিখিয়েছে। আমরা যে ছুরি, দা, কাঁচি, লাঙ্গল ব্যবহার করি, এগুলো তৈরির পেছনে বিজ্ঞানের অবদান রয়েছে। এগুলো হলো প্রযুক্তি।
যেসব প্রযুক্তি বেশ অনেক দিন আগে উদ্ভাবিত হয়েছে সেগুলো পুরনো প্রযুক্তি। গরমে বাতাস করার জন্য তালের হাতপাখা পুরনো প্রযুক্তি কিন্তু ইলেকট্রিক ফ্যান আধুনিক প্রযুক্তি। শিক্ষার ক্ষেত্রে কম্পিউটার, রেডিও, টেলিভিশন, টেপ রেকর্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবহার আধুনিক প্রযুক্তির উদাহরণ।
প্রশ্ন : ৩। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত কয়েকটি প্রযুক্তির নাম লেখ।
উত্তর : চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত কযেকটি প্রযুক্তির নাম :
১. এক্স-রে : শরীরের ভেতরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবস্থা দেখার জন্য এক্স-রে ব্যবহার করা হয়।
২.আলট্রাসনোগ্রাফি : আলট্রাসনো গ্রাফিতে শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে দেহের ভেতরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ছবি নেয়া হয়।
৩. ইসিজি : ইসিজি ব্যবহার করা হয় হৃদরোগ নির্ণয়ে।
৪. লেজার রশ্মি : লেজার রশ্মি ব্যবহার করে রক্তপাত ছাড়াই অনেক জটিল অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে।
৫. অ্যান্টিবায়োটিক ও ইনসুলিন : অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ আবিষ্কারের ফলে এক সময়ের ভয়ংকর ব্যাধি কলেরা, যক্ষ্মা, টাইফয়েড এখন আর দুরারোগ্য নয়। তাছাড়া আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ইনসুলিন ডায়াবেটিস রোগীর জীবনযাপন সহজ করেছে।
প্রশ্ন : ৪। একটি উদাহরণ দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পার্থক্য লেখ।
উত্তর : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একে অপরের সঙ্গে খুব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তার পরও প্রয়োগের ক্ষেত্র ও ধরন অনুযায়ী এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।

No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...