Sunday, October 21, 2012

পরীক্ষার আগের দিন

ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী আগের দিন প্রথম পরীক্ষার পড়া রিভিশন দেবে। পরীক্ষার সকল উপকরণ তোমার কাছে আছে কি না তা দেখে নাও। প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, একাধিক কালো বল পয়েন্ট, স্কেল, জ্যামিতি বক্স, বোর্ড, হাতঘড়ি, পেন্সিল সবই তুমি গুছিয়ে রাখো। খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম ঠিকভাবে করবে। সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়বে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত টিভি দেখা একেবারেই ছেড়ে দেবে।


>>  পরীক্ষার দিন

পরীক্ষার দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবে। হালকা নাস্তা করে পড়তে বসবে। প্রথম পরীক্ষার দিন অন্তত ১ ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে পৌঁছাবে। যাওয়ার আগে বাড়ির গুরুজনদের আশির্বাদ নিতে ভুলবে না। ফাইল ব্যাগে প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, কলম, স্কেল, বোর্ড নিয়েছ তো? হাতঘড়ি অবশ্যই নেবে। কিন্তু কেন্দ্রে মোবাইল নেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। কলমগুলো ঠিক আছে কি না চেক করে নাও। লাল কলমের ব্যবহার একেবারেই নিষেধ। কেন্দ্র দূরে হলে পরীক্ষার হলে ঢোকার পূর্ব পর্যন্ত একজনকে সাহায্যকারী হিসেবে সঙ্গে রাখবে। লজেন্স বা চুয়িংগাম চুষার অভ্যাস থাকলে তা সাথে করে নিতে পার। পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে যাওয়ার পর সিট পেতে সমস্যা হলে কর্তৃপক্ষের সহায়তা নেবে। তোমার লেখা শেষ হলেও শেষ ঘণ্টা পড়ার আগে বের হবে না। প্রয়োজনে বারবার রিভিশন দেবে। পরিদর্শককে ভয় পাবে না। মনে রাখবে, তোমাকে সাহায্য করার জন্যই তিনি কক্ষে ডিউটি দিচ্ছেন। তবে কোনো অবৈধ আবদার উনার কাছে করবে না।
শেষ ঘণ্টা পড়ার সাথে সাথে খাতা জমা দিয়ে সোজা বাসায় চলে আসবে। খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম শেষে আবার পড়তে বসবে।


>> পরীক্ষার খাতা

প্রথম পাতায় রোল নম্বর, রেজি. নম্বর, বিষয় কোডের বৃত্ত সঠিকভাবে ভরাট করবে। নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় সেট কোডের বৃত্ত অবশ্যই সঠিকভাবে ভরাট করতে হবে। খেয়াল রাখবে খাতার কোথাও যেন কালির দাগ না পড়ে। মনে রাখতে হবে, পরীক্ষার খাতায় ভালো উপস্থাপনাই বেশি নম্বর পেতে সহায়তা করে। সুন্দর উপস্থাপনা বলতে পরীক্ষার খাতার সার্বিক পরিচ্ছন্নতা, নির্ভুল, মানসম্মত ও যথাযথ উত্তর লেখাকেই বোঝায়। খাতার ওপরে ও বাম দিকে পেনসিল বা বল পয়েন্ট কলম দিয়ে এক ইঞ্চি পরিমাণ মার্জিন দিতে হবে। প্রতিটি উত্তর শেষ হলে সরলরেখার সমাপ্ত চিহ্ন দিতে হবে। অনেকেই পরীক্ষার খাতায় ভাঁজ দিয়ে থাকে। এটা না করে মার্জিন টানতে হবে। উত্তর লেখার সময় প্রশ্নের নম্বর লিখে নিচে দাগ টেনে দেবে।


>>  প্রশ্ন নির্বাচন ও উত্তর
প্রশ্নপত্র হাতে পেলে তা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখে নেবে। এতগুলো প্রশ্নের মধ্যে দু-একটা তোমার অজানা থাকতেই পারে। এ নিয়ে মন খারাপ করবে না। লিখতে লিখতে বিষয়গুলো মনে পড়বে। আবার প্রশ্ন সহজ হয়েছে অথবা কমন পড়েছে ভেবে খুব উত্ফুল্ল হওয়ারও প্রয়োজন নেই। এতে প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। প্রশ্ন পাওয়ার পর বাছাইয়ের কাজটি গুরুত্বপূর্ণ। যে প্রশ্নটার উত্তর তুমি ভালো পার সেটা দিয়ে শুরু করবে। যেসব প্রশ্নের পূর্ণ নম্বর পাওয়া যায়, জানা থাকলে সে ধরনের প্রশ্ন নির্বাচন করা উচিত। একই ধরনের প্রশ্ন হলে, যেটি ভালো জানা সেটি প্রথমে লিখবে। বেখেয়ালে কোনো প্রশ্ন বাদ রেখে এলে কি না, অথবা প্রশ্নের ভেতরের ছোট অংশগুলোর উত্তর দেওয়া বাদ গেল কি না সে বিষয়ে খুবই সাবধান থাকবে। কোনো কোনো প্রশ্নের মধ্যে নানা অংশ থাকে। তার কোনো অংশ যেন বাদ না যায়। কখনোই আংশিক প্রশ্ন পড়ে উত্তর শুরু করবে না। প্রশ্নে কী চাওয়া হচ্ছে তা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে হবে। প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি উত্তরের মানকে সমৃদ্ধ করে। আর সব সময় চেষ্টা করবে উত্তরগুলো যাতে ধারাবাহিকভাবে হয়। যে প্রশ্নের উত্তরগুলো উচ্চমানসম্পন্ন এবং সবচেয়ে ভালো মনে আছে, সেগুলোই আগে লিখতে শুরু করবে। আর উত্তরগুলো অনুচ্ছেদ করে লিখতে হবে। এতে করে পরীক্ষকের মূল্যায়ন ভালো হবে।
>> সময়ের দাম

পরীক্ষা হলে সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন হাতে নিয়ে প্রশ্নের মানের সঙ্গে সময়টা ভাগ করে নেবে। প্রত্যেক প্রশ্নের জন্য আলাদা সময় নিলে তোমার কোনো প্রশ্নই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তবে সময় ভাগ করার আগে অবশ্যই ১৫ মিনিট সময় হাতে রেখে নেবে। বড় ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের জন্য কতটুকু সময় দিতে পারবে, তার হিসেব আগে থেকেই করে নেবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর ভালোভাবে জানা থাকলে নির্ধারিত সময়ের আগেই লিখে শেষ করবে এতে করে যে সময় বাঁচবে তা অন্য প্রশ্নের উত্তরে কাজে লাগবে।

>> সঠিকভাবে প্রশ্নের নম্বর দেওয়া

প্রশ্নের নম্বরটি বাঁ দিকে নির্ভুলভাবে অবশ্যই বসাবে। একটি প্রশ্নের মধ্যে নানা অংশ থাকতে পারে। পৃথক প্রশ্নের উত্তর পৃথক অনুচ্ছেদে লেখা উচিত। আবার অনেক প্রশ্নেই (ক), (খ) অংশ থাকে। এক্ষেত্রে সেভাবে (ক), (খ) নম্বর লিখে তবেই উত্তর দেবে। যেমন : ১ নং প্রশ্নের ‘ক’-এর উত্তর।

>> ছক দেওয়া, চিত্র আঁকা
প্রশ্নের প্রয়োজনে যখনই পারবে ছক কিংবা চিত্র এঁকে তোমার উত্তরের গুণমান বাড়াবে, অবশ্য তাড়াতাড়ি আঁকার অভ্যাস থাকলেই এ কাজ পারবে। এতে করে বেশি নম্বর আসবেই। সাধারণ বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা গার্হস্থ অর্থনীতির ছবি অবশ্যই দেবে। গণিতে উপপাদ্য ও সম্পাদ্যে নিখুঁতভাবে চিত্র অঙ্কন করবে। অর্থনীতিতে প্রয়োজনীয় ছক দেবে।

>> হাতের লেখা

সুন্দর হাতের লেখা একটি সম্পদ। আবার সুন্দর হাতের লেখাও যদি স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন না হয় তাহলে নম্বরও কম ওঠে। তাই শব্দের এবং লাইনের মধ্যে ফাঁক রেখে পরিচ্ছন্ন করে লিখতে হবে। কোনো শব্দ, লাইন বা অনুচ্ছেদ কেটে দিতে হলে হিজিবিজি করে নয় একটানে পরিষ্কার করে কাটতে হবে। ভুল শব্দ বা বাক্যাংশের ওপর লিখে সংশোধন করলে খাতাটি নোংরা হয়ে ওঠে তাই এটি কখনোই করবে না। এক্ষেত্রে কেটে দিয়ে ওপরে বা পাশে ঠিক শব্দ বসাবে।

>> ঠিক বানান

যেসব বানান সচরাচর ভুল হয় সেগুলো বেশি করে অনুশীলন করো। বিখ্যাত আর পরিচিত নামের বানান ভুল করলে পরীক্ষক বিরক্ত হবেন। এতে তোমার নম্বরও কমে যেতে পারে। বিশেষ করে তোমার পাঠ্যবইয়ের গদ্য, পদ্য, সহপাঠের নাম এবং লেখকের নাম যেন ভুল না হয়।
 
>> রিভিশন দেওয়া
কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে তোমাদের উত্তর লেখা শেষ করবে। কিছুটা সময় নিয়ে পুরো খাতার রিভিশন করা গেলে খুবই ভালো হয়। এতে বেশ কিছু ভুল সেরে নেওয়া যাবে। গণিতের ক্ষেত্রে এ রকম রিভিশন অবশ্যই জরুরি। কারণ সামান্য একটি অক্ষর বা সংখ্যার জন্য সম্পূর্ণ নম্বরই কাটা যেতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...