পরীক্ষা শুরু হতে যেহেতু আর মাত্র কয়েক দিন বাকি তাই তোমাদের প্রস্তুতি এর
মধ্যেই গুছিয়ে ফেলতে হবে। পরীক্ষার আগের দিন প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন :
একাধিক ভালো রানিং কলম, পেন্সিল, ইরেজার, স্কেল, প্রবেশপত্র, ক্লিপ বোর্ড,
হাতঘড়ি ইত্যাদি হাতের কাছে রাখবে। প্রবেশপত্রের এক কপি ফটোকপি করে রাখবে
কারণ মূল প্রবেশপত্র কোনো কারণে হারিয়ে গেলে তা বিকল্প হিসেবে ব্যবহার
করতে পারে। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সবচেয়ে বেশি সজাগ থাকতে হবে। পরীক্ষার
প্রস্তুতিকালীন এ সময়টায় পুষ্টিকর খাবারের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। আর
পরীক্ষার আগের রাত বেশি জাগা ঠিক নয়। কেননা শারীরিক দুর্বলতার কারণে
পরীক্ষার হলে ঘুম আসতে পারে। প্রথম পরীক্ষার দিন কমপক্ষে আধা-ঘণ্টা আগে
পরীক্ষার হলে গিয়ে আসন খুঁজে নিতে হবে এবং আসনটি টিসু পেপার বা অন্য কিছু
দিয়ে পরিষ্কার করে নেবে যেন আশপাশে ময়লা না থাকে। পরীক্ষার খাতা পাওয়া
মাত্রই স্রষ্টার নাম স্মরণ করে পরীক্ষার রোল, বিষয়ের নাম অর্থাৎ প্রয়োজনীয়
ঘর পূরণ করবে। যদি কোনো কারণে খাতার প্রথম পৃষ্ঠার কোনো কিছু ভুল কর, তাহলে
সঙ্গে সঙ্গেই দায়িত্বরত ইনভেজিলেটরকে অবহিত করবে। ঘাবড়ে যাবে না। কারণ
ইনভেজিলেটরই তোমার ভুলের ব্যাপারটি সমাধান করার চেষ্টা করবেন। এতে
রেজাল্টের কোন সমস্যা হবে না বলে আশা করি; বরং ইনভেজিলেটরকে না জানালেই
সমস্যা হতে পারে। খাতায় যেখান থেকে লেখা শুরু করার কথা বলা থাকে সেখান
থেকেই শুরু করবে। তবে তার আগে খাতার বামে এবং উপরে প্রায় দেড় ইঞ্চি করে
পেন্সিল দিয়ে মার্জিন দেবে। অবশ্য কেউ ইচ্ছা করলে চতুর্ভুজ স্কেল দিয়েও
মার্জিন দিবে। আর হ্যাঁ, প্রশ্ন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর লিখবে না।
প্রশ্নটি কমপক্ষে একবার মন দিয়ে পড়ে নেবে। যেসব প্রশ্নোত্তর তোমার কাছে
খুব সহজ মনে হবে এবং ভালো নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রথমে সেগুলো
সিলেক্ট করে ঠাণ্ডা মাথায় নিয়ম অনুযায়ী উত্তর লেখার চেষ্টা করবে। কোনো
কারণে কোনো লেখা ভুল হলে বেশি কাটাকাটি না করে একটানে কেটে দিয়ে ফের লেখা
শুরু করবে। আর যদি কোনো শব্দ লিখতে ভুলে যাও, তাহলে কাকপদ চিহ্ন (ইংরেজিতে
'এরো চিহ্ন' বলে) দিয়ে উপরে লিখবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর অযথা বড় কিংবা
অপ্রাসঙ্গিক লিখবে না। রচনা ১৫০- ১৮০ শব্দের মধ্যে লেখার চেষ্টা করবে।
বানানের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকবে। অনেক শিক্ষার্থী য, ম, স একইভাবে লেখে,
আবার অন্য কেউ কেউ খ, ঘ একইভাবে লেখে। আবার কেউ কেউ কোনো কোনো বর্ণের
পূর্ণমাত্রা, অর্ধমাত্রা, মাত্রাহীন এগুলোর যথার্থ প্রয়োগ করে না। কিন্তু
এগুলো সঠিকভাবে লেখা উচিত। উল্লেখ্য, লেখকের নামের পরিবর্তে তার সর্বনাম
ব্যবহার করলে বানানে সম্মানসূচক চন্দ্রবিন্দু ( ঁ) দেওয়া উচিত। বিরামচিহ্ন
ব্যবহারে ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা সঠিকভাবে বিরামচিহ্নের ব্যবহার
না করলে অনেক সময় অর্থের পরিবর্তন হতে পারে। তাছাড়া কবিতার আট চরণ লেখার
সময় বিরাম চিহ্ন খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে। কবিতা ও কবির নাম উল্লেখ
করে নিচে প্রায় এক ইঞ্চি ফাঁকা রেখে কবিতা লেখা উচিত। উল্লেখ্য, কোনো
প্রশ্নোত্তরে যে কোনো কবিতা/ প্রবন্ধ/ গল্প/ উপন্যাস/ নাটক- এর নাম লিখতে
হলে অবশ্যই উদ্ধরণ চিহ্ন (' ') দেওয়া উচিত। অঙ্কে একক লিখবে। কোনো বিষয়ে
চিত্র দেওয়ার দরকার হলে এক্ষেত্রে পেন্সিলের মাথা সরু হলে ভালো হয়। শেষের
দিকে হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকলে প্রশ্নের উত্তর শুধু এক শব্দে বা এক
বাক্যে লিখবে। ওই সময় খাতায় মার্জিন দেবে না, তবে পরীক্ষকের নম্বর দেওয়ার
জন্য অবশ্যই খাতার বাম পাশে প্রায় দেড় ইঞ্চির মতো জায়গা রেখে লিখবে। ওই সময়
কোনো প্রশ্নের নং যেমন : ১৩ (ক) নং প্রশ্নের উত্তর : লিখে সাইনপেন দিয়ে
আন্ডারলাইনও করবে না; বরং লিখবে- ১৩(ক) উ: এভাবে ১৩(খ) উ: ১৩(গ) উ:।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার কমপক্ষে পাঁচ মিনিট আগে পুরো খাতাটি রিভিশন দেওয়ার
চেষ্টা করবে বিশেষ করে প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে প্রশ্নের নং ভালোভাবে
মিলিয়ে দেখবে। আর শতভাগ সঠিক উত্তর লেখার চেষ্টা করবে।
পরিশেষে বলতে চাই- 'Practice makes a man perfect.' আসলেই চর্চার কোনো বিকল্প নেই। পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ কথাটি আরও বেশি প্রযোজ্য। পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখা সুন্দর করার চেষ্টা করবে এবং সঠিক ও যথার্থভাবে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবে। তাহলেই আশা করি, তোমরা পরীক্ষায় অর্জন করতে পারবে তোমাদের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল।
পরিশেষে বলতে চাই- 'Practice makes a man perfect.' আসলেই চর্চার কোনো বিকল্প নেই। পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ কথাটি আরও বেশি প্রযোজ্য। পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখা সুন্দর করার চেষ্টা করবে এবং সঠিক ও যথার্থভাবে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবে। তাহলেই আশা করি, তোমরা পরীক্ষায় অর্জন করতে পারবে তোমাদের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল।
No comments:
Post a Comment