Monday, November 5, 2012

পরামর্শ : ইংরেজি শেখার কিছু করণীয় দিক

আপনার সন্তানের ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধিতে আপনার অদম্য আগ্রহ এবং আন্তরিকতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন আপনার ছেলেমেয়ের আন্তরিক ইচ্ছাবোধ। তাদের প্রশংসা করার মাধ্যমে ইংরেজি শিখনে আগ্রহী করে তোলা যাবে।
যেসব নিয়ামক শিশুর ইংরেজি শিখতে সহায়তা করে সেগুলি হচ্ছে :
১. ঘরে ইংরেজি ভাষা চর্চার সুযোগ। ২. ইংরেজি ভাষার ক্লাবে বা ক্যামপে যাওয়া। ৩. বিদ্যালয়ে পঠিত বিষয় হিসেবে ইংরেজি থাকা। ৪. ইরষরহমঁধষ ঝপযড়ড়ষ-এ অধ্যয়ন করা অর্থাৎ আমাদের দেশের শিশুরা এমন বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করবে, যেখানে ইংরেজি ও বাংলা দুটোরই ব্যবহার হয়। ৫. ইংরেজি ব্যবহূত হয় এ রকম দেশে বসবাস করা। ৬. ইংরেজি ব্যবহূত হয় এ রকম দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস না করতে পারলেও ছুটির সময়ে বেড়াতে সেসব দেশে যাওয়া। ৭. ইংরেজি জানা লোকের সাহচর্যে থাকা। ৮. ইংরেজি জানা প্রতিবেশী অথবা বিদেশি বন্ধু থাকা। ৯. ইংরেজি সংবাদ শোনা ও ইংরেজি ভাষার টিভি প্রোগ্রাম দেখা। ১০. ইরষরহমঁধষ উরপঃরড়হধৎু, চরপঃঁৎব উরপঃরড়হধৎু, ঊষবপঃৎড়হরপং উরপঃরড়হধৎু ইত্যাদি ব্যবহার। ১১. ইংরেজিতে লেখা বইগুলো, গল্প, ছড়া, গান, তথ্যবই, খেলা, ছবি, নোটিশ, পাপেট ইত্যাদির ব্যবহার। ১২. খেলনার, খাবারের, আসবাবপত্র ইত্যাদির ইরষরহমঁধষ ক্যাটালগের ব্যবহার। ১৩. মানচিত্র, সময়সূচি, ভ্রমণ পুস্তিকা, বিদেশি ম্যাগাজিন, ইংরেজি পত্রপত্রিকার ব্যবহার।
শিশুরা যেসব বিষয়ে নিজেদের মধ্যে ইংরেজিতে কথা বলতে পারে সেগুলি হচ্ছে :
১। তাদের নিজেদের বিষয়ে, ২। তাদের পরিবারের বিষয়ে, ৩। তাদের আগ্রহের বিষয়ে, ৪। তাদের প্রতিদিনের প্রয়োজন সমপর্কে, ৫। জীবন সমপর্কে, ৬। কী করছে এবং করতে যাচ্ছে সে বিষয়ে, ৭। তাদের চারপাশের পরিবেশ সমপর্কে, ৮। তাদের অনুভূতি সমপর্কে, ৯। তাদের পছন্দ এবং অপছন্দ নিয়ে, ১০। তাদের অসুবিধা নিয়ে।
ছোট্ট শিশুরা নিজের মাতৃভাষা ব্যতীত অন্য যে কোন ভাষা শিখতে প্রবল আগ্রহী হয়। তারা বিদেশি শব্দ শিখতে পারলে গর্ববোধ করে। অন্যদের দেখাতে চায় যে তারা অন্য ভাষা জানে। জেনে হয়তো অবাক হবেন যে পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ শিশু দু'তিনটি ভাষায় কথা বলতে পারে। তাদের পরিবার তাদের কাছে এ রকম প্রত্যাশাও করে। তারা এ রকম করতে পারে কারণ তাদের পরিবার, সমাজব্যবস্থা এ বিষয়টিকে খুবই স্বাভাবিক বিষয় বলে ধরে নেয়। দু'তিনটি ভাষা শিখতে গিয়ে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম মোটেও ব্যাহত হয় না। ১০-১১ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে বিদেশি ভাষা শিখছে যারা, তাদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। পরিবার ও বিদ্যালয় তাদের উৎসাহিত করছে। এখন বিশ্বায়নের যুগ। ব্যবসায়, ভ্রমণ, চাকরি প্রভৃতি কাজে ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অনেক চাকরির জন্য এখন ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন হয়।
শিশুদের ইংরেজি শেখার বিষয়টি খুব কঠিন কাজ নয়। এর জন্য তাদের বেশি বেগ পেতে হয় না। তবে বিদ্যালয়ের অনুপযোগী শিক্ষাদান কৌশল, বিদ্যালয়ের পরিবেশ, ভালো শিক্ষা উপকরণের অভাব তাদের ইংরেজি শেখাটাকে কঠিন করে তুলতে পারে। মা-বাবার কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পেলে শিশুরা তীক্ষ্ন হয়। বাবা-মা যদি ইংরেজি শেখার গুরুত্ব না বুঝতে পারেন তাহলে তারা শিশু-সন্তানদের ইংরেজি শিখতে অনুপ্রাণিত করতে চান না।
শিশুরা ভালোভাবে ইংরেজি শিখতে পারে যদি শিক্ষকের সঙ্গে তাদের সমপর্ক আন্তরিক ও উৎসাহব্যঞ্জক হয়। তারা যদি তাদের ভাবের আদান-প্রদান এবং কথোপকথন ঠিকমতো সমপন্ন করতে পারে। শিশুরা বড়দের সঙ্গে কথা বলতে পারে যদি তারা তা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। প্রত্যেক শিশুই আলাদা ব্যক্তিত্ববোধসমপন্ন হয়। প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিত্রিপ্তয়া থাকে। কাজেই তাদের আলাদাভাবে বুঝতে হবে, জানতে হবে এবং আবিষ্কার করতে হবে। কেবল মা-বাবাই পারেন শিশুকে ভালোভাবে জানতে, তৎপরতার সঙ্গে দীর্ঘ সময় ব্যয়সাপেক্ষে বুঝতে।
নিজ গৃহ থেকেই শিশুর সত্যিকার ভাষা শিক্ষাটা শুরু হয়। শিশুরা যদিও চৎব-ঝপযড়ড়ষ-এ যায় তবু ভাষা শিক্ষার আসল কাজটি শুরু হয় গৃহে। মা-বাবার মাধ্যমেই তাদের হাতেখড়ি হয়। বিদ্যালয়ে অসংখ্য শিশু শিক্ষার্থীর ভিড়ে বেড়ে ওঠে আপনার সন্তান। শিক্ষকদের সঙ্গে প্রতিটি শিশুর পৃথক আলাপচারিতার সুযোগ খুব কমই থাকে। কিন্তু বাবা-মা পারেন শিশুর দিকে বেশি মনোযোগ দিতে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও উৎসাহ জোগাতে। প্রয়োজনীয় সুযোগও করে দিতে পারেন। নিজের ভাষার মতোই শিশুরা ইংরেজি শিখতে পারে। ধরুন, আপনি ইংরেজিতে কথা বলতে পারছেন না। ইংরেজি বিষয়ে আপনার দক্ষতা তেমন নেই। আপনি প্রয়োজনীয় পাঠ উপকরণ জোগাড় করে দিতে পারেন আপনার সন্তানকে। তা ছাড়া, কীভাবে লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়, সঠিক উচ্চারণের নিয়ম-কানুন, নতুবা শব্দ লেখা ও মনে রাখা যায় কীভাবে সেসব কৌশল জানার চেষ্টা করুন।
বাবা-মা শিক্ষকের চেয়ে তাদের সন্তানকে ভালো করে জানেন। মা-বাবা তাদের অভিজ্ঞতা এবং অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে তাদের শিশুসন্তানের মেজাজ-মর্জি বুঝতে পারেন। তারা শিশুর চাহিদা এবং আগ্রহ সমপর্কে জানতে পারেন। তাদের ভাষা ব্যবহারের ভঙ্গি, স্তর, কাজ করার সামর্থ্য, শেখার ধরন প্রভৃতি বুঝতে পারে। কীভাবে শিশুসন্তানের আগ্রহ সৃষ্টি করা যাবে এবং তা ধরে রাখা যাবে তা মা-বাবাই ভালো জানবেন।
বাবা-মা নিবিড়ভাবে পারিবারিক পরিবেশে ড়হব-ঃড়-ড়হব ংবংংরড়হ-এর মাধ্যমে শিশু শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণে রাখতে পারেন, যা বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। শিশুরা মা-বাবার কাছে শিখতে অভ্যস্ত হয় এবং অবচেতনভাবেই তা শুরু করে। শিশুরা গৃহে মা-বাবার কাছে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। মা-বাবার সঙ্গে মিলেমিশে ভাষা শিখতে গিয়ে শিশুরা তাদের ভালোবাসা, আগ্রহ, উৎসাহ, প্রশংসা প্রভৃতিতে সুদৃঢ় করতে পারে।
শোনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। শেখার যত দক্ষতা রয়েছে, তার মধ্যে শোনার দক্ষতা সবগুলোর ভিত্তি। শিশুরা দেখে এবং অনুকরণের মাধ্যমে শিখে। তারা শিখতে গিয়ে যদি ভুল করে তাহলে তাদের সমালোচনা না করে শুধরে দিতে হবে। পাঠ উপকরণ যখন যেখানে যে অবস্থায় পাওয়া যায় তা সংগ্রহ করতে হবে। সেগুলো প্রদর্শন করলে শিশুদের প্রেষণা বৃদ্ধি পাবে। এসপয়ভপ বলেছে, ুঐব যিড় শহড়ংি হড় ভড়ৎবরমহ ষধহমঁধমব, ফড়বং হড়ঃ ঃৎঁষু শহড় িযরং ড়হিচ্. কাজেই আপনার শিশুসন্তানকে অবশ্যই ভালোভাবে ইংরেজি ভাষাটাকে রপ্ত করতে দিন। যত্নবান ও সংবেদনশীল হোন। সুপরিকল্পিত সুযোগ সৃষ্টি করুন।
আপনাদের এবং সন্তানের মধ্যে নিবিড় বন্ধন সৃষ্টি করুন। দেখবেন, সে মাতৃভাষার চেয়ে বেশি আগ্রহী হবে ইংরেজি শিখতে।

No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...