শিক্ষার প্রচলিত মানদ-ে একজন শিক্ষার্থীর মেধা নির্ধারিত হয়ে থাকে তার
পরীক্ষার ফলাফল বা পরীক্ষায় জিপিএর ভিত্তিতেই। এ কারণে প্রায় সব
ছাত্রছাত্রীই মরিয়া হয়ে ছোটে ভালো জিপিএ অর্জনের প্রতিযোগিতায়। তবে
নোট-গাইডের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর না বুঝে মুখস্থ করে পরীক্ষার হলে লিখতে
যাওয়া যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনই ক্ষতিকর। এতে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি হয়,
ব্যক্তিগতভাবে নিজের। অর্থাৎ পড়ার মূল বিষয়গুলো না বোঝার কারণে তা শেখা বা
জানা বাকিই থেকে যায়, যা শিক্ষা-পরবর্তী কর্মজীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি
করে।
প্রকৃত জ্ঞানার্জন বাস্তব জীবনের সব ক্ষেত্রে ফলদায়ক হয়ে থাকে, তা একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়। অনেক বছর পরও একজন শিক্ষার্থীর কথা মনে পড়ে। মফস্বলের কলেজ থেকে প্রায় সুযোগ-সুবিধাহীন অবস্থায় পড়াশোনা করে উচ্চতর নম্বর নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি পাস করে ওই শিক্ষার্থী এসেছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য। এইচএসসির রেজাল্ট খুব উঁচু মানের না হলেও সে ছিল যথেষ্ট মৌলিক জ্ঞানের অধিকারী। তার অর্জিত ফল যতটুকু সবটুকুই প্রকৃত পড়াশোনা করে। কিন্তু সে যখন জানল, ৪০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ২৮ হাজার ভর্তি-প্রার্থী, তখন সে হতাশ হয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার সহজ হিসাব, ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে তো অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী খুবই ভালো রেজাল্টের অধিকারী। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে কীভাবে? অন্যদের অনুরোধে সে পরীক্ষা দেয়। ফলাফলে দেখা গেল, সে ছয়টি বিভাগের মধ্যে চারটিতেই মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ পরীক্ষায় যথেষ্ট ভালো করাতেই তার এতটা ভালো ফল হয়েছে। এ ঘটনায় এটা খুবই স্পষ্ট যে, ওই পরীক্ষায় প্রচলিত মানদ-ে অনেক ভালো ছাত্র ও অনেক উঁচু নম্বরধারী শিক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উচিত অবশ্যই মূল পাঠ্যবইটি বিস্তারিতভাবে এবং ভালোভাবে বুঝে পড়া। নোট-গাইডের সংক্ষিপ্ত পড়াশোনার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে মূল বইয়ের পড়াগুলো বুঝে পড়তে হবে। মুখস্ত বিদ্যাকে যথাসম্ভব বাদ দিতে হবে। প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি বিষয়ের মধ্যেই রয়েছে অনেক জানার বিষয়, জ্ঞানের বিষয় ও আনন্দের বিষয়। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটি লেখা থেকে সেই জানার এবং আনন্দের বিষয়টিকে আবিষ্কার করতে হবে। তবেই পড়া হবে উপভোগ্য ও মনে রাখার দিক থেকে টেকসই।
বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাঠ-উপকরণ আগের চেয়ে সহজলভ্য। এ কারণে একজন শিক্ষার্থী পাঠ্যবইয়ের পঠিত বিষয়টিকে আরও ভালোভাবে বুঝে নিতে পারে অন্য উৎস থেকে। ধরা যাক নবম-দশম শ্রেণীর সালোক সংশ্লেষণ বিষয়টির কথা। এ বিষয়টি পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত অংশে পড়া ছাড়াও তারা লাইব্রেরিতে উচ্চতর বই ও পত্র-পত্রিকা থেকে আরও ভালোভাবে জানতে পারে। অথবা ওয়েবসাইট থেকে বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানার সুযোগ নিতে পারে। এসব উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদির সহযোগিতায় তারা তৈরি করতে পারে ব্যতিক্রমধর্মী হ্যান্ডনোট। আর এসব উৎস থেকে পড়ার ফলে মূল বিষয়টি তার কাছে সহজ হয়ে যাবে। এর ফলে কেবল পরীক্ষায় উচ্চ নম্বর অর্জনই নয়, পরবর্তী কর্মজীবনে তার এই প্রকৃত জানার বিষয়টি কখনোই প্লান হবে না। ফলে যে কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যেমন তারা সফলকাম হবে, তেমনি ব্যক্তিজীবনে নানামুখী জ্ঞানের প্রয়োগে তারা সফল হবে।
কেবল নম্বর অর্জনের জন্য না বুঝে মুখস্ত করার প্রবণতা থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমানে স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীতে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মুক্তচিন্তা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। তবে দেখা যাচ্ছে যে, এ পদ্ধতির প্রশ্নোত্তর নিয়েও বাজারে নানা রকম নোট-গাইডবই পাওয়া যাচ্ছে। সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নোত্তর কেমন হবে, তার নমুনা বিভিন্ন উৎস থেকে শিক্ষার্থীরা দেখে নিতে পারে। তবে কেবল নমুনা হিসেবেই তা পড়া উচিত। কোনক্রমেই এগুলো মুখস্ত করা উচিত হবে না। কেবল নম্বরের জন্য মরিয়া হয়ে মুখস্তসহ নানা কৌশল অবলম্বন না করে প্রতিটি পাঠের অন্তর্নিহিত জ্ঞান ও আনন্দ যাতে শিক্ষার্থীরা পেতে উৎসাহিত হয়, সে জন্য তার চারপাশের সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
প্রকৃত জ্ঞানার্জন বাস্তব জীবনের সব ক্ষেত্রে ফলদায়ক হয়ে থাকে, তা একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়। অনেক বছর পরও একজন শিক্ষার্থীর কথা মনে পড়ে। মফস্বলের কলেজ থেকে প্রায় সুযোগ-সুবিধাহীন অবস্থায় পড়াশোনা করে উচ্চতর নম্বর নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি পাস করে ওই শিক্ষার্থী এসেছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য। এইচএসসির রেজাল্ট খুব উঁচু মানের না হলেও সে ছিল যথেষ্ট মৌলিক জ্ঞানের অধিকারী। তার অর্জিত ফল যতটুকু সবটুকুই প্রকৃত পড়াশোনা করে। কিন্তু সে যখন জানল, ৪০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ২৮ হাজার ভর্তি-প্রার্থী, তখন সে হতাশ হয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার সহজ হিসাব, ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে তো অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী খুবই ভালো রেজাল্টের অধিকারী। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে কীভাবে? অন্যদের অনুরোধে সে পরীক্ষা দেয়। ফলাফলে দেখা গেল, সে ছয়টি বিভাগের মধ্যে চারটিতেই মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ পরীক্ষায় যথেষ্ট ভালো করাতেই তার এতটা ভালো ফল হয়েছে। এ ঘটনায় এটা খুবই স্পষ্ট যে, ওই পরীক্ষায় প্রচলিত মানদ-ে অনেক ভালো ছাত্র ও অনেক উঁচু নম্বরধারী শিক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উচিত অবশ্যই মূল পাঠ্যবইটি বিস্তারিতভাবে এবং ভালোভাবে বুঝে পড়া। নোট-গাইডের সংক্ষিপ্ত পড়াশোনার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে মূল বইয়ের পড়াগুলো বুঝে পড়তে হবে। মুখস্ত বিদ্যাকে যথাসম্ভব বাদ দিতে হবে। প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি বিষয়ের মধ্যেই রয়েছে অনেক জানার বিষয়, জ্ঞানের বিষয় ও আনন্দের বিষয়। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটি লেখা থেকে সেই জানার এবং আনন্দের বিষয়টিকে আবিষ্কার করতে হবে। তবেই পড়া হবে উপভোগ্য ও মনে রাখার দিক থেকে টেকসই।
বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাঠ-উপকরণ আগের চেয়ে সহজলভ্য। এ কারণে একজন শিক্ষার্থী পাঠ্যবইয়ের পঠিত বিষয়টিকে আরও ভালোভাবে বুঝে নিতে পারে অন্য উৎস থেকে। ধরা যাক নবম-দশম শ্রেণীর সালোক সংশ্লেষণ বিষয়টির কথা। এ বিষয়টি পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত অংশে পড়া ছাড়াও তারা লাইব্রেরিতে উচ্চতর বই ও পত্র-পত্রিকা থেকে আরও ভালোভাবে জানতে পারে। অথবা ওয়েবসাইট থেকে বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানার সুযোগ নিতে পারে। এসব উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদির সহযোগিতায় তারা তৈরি করতে পারে ব্যতিক্রমধর্মী হ্যান্ডনোট। আর এসব উৎস থেকে পড়ার ফলে মূল বিষয়টি তার কাছে সহজ হয়ে যাবে। এর ফলে কেবল পরীক্ষায় উচ্চ নম্বর অর্জনই নয়, পরবর্তী কর্মজীবনে তার এই প্রকৃত জানার বিষয়টি কখনোই প্লান হবে না। ফলে যে কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যেমন তারা সফলকাম হবে, তেমনি ব্যক্তিজীবনে নানামুখী জ্ঞানের প্রয়োগে তারা সফল হবে।
কেবল নম্বর অর্জনের জন্য না বুঝে মুখস্ত করার প্রবণতা থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমানে স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীতে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মুক্তচিন্তা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। তবে দেখা যাচ্ছে যে, এ পদ্ধতির প্রশ্নোত্তর নিয়েও বাজারে নানা রকম নোট-গাইডবই পাওয়া যাচ্ছে। সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নোত্তর কেমন হবে, তার নমুনা বিভিন্ন উৎস থেকে শিক্ষার্থীরা দেখে নিতে পারে। তবে কেবল নমুনা হিসেবেই তা পড়া উচিত। কোনক্রমেই এগুলো মুখস্ত করা উচিত হবে না। কেবল নম্বরের জন্য মরিয়া হয়ে মুখস্তসহ নানা কৌশল অবলম্বন না করে প্রতিটি পাঠের অন্তর্নিহিত জ্ঞান ও আনন্দ যাতে শিক্ষার্থীরা পেতে উৎসাহিত হয়, সে জন্য তার চারপাশের সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
No comments:
Post a Comment