Thursday, November 15, 2012

শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ

প্রতিটি বিষয়ে ভালো নম্বর পাওয়ার কৌশল তোমার হাতেই। পরীক্ষার পূর্বে পড়াশোনা এবং হলের প্রস্তুতি নিয়ে একটা পরিকল্পনা  করে নাও দেখবে সহজেই  অনেক নম্বর পেয়ে গেছ। তোমরা কি কি বিষয়ের প্রতি অধিক খেয়াল রাখবে তা সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো:
পরীক্ষার খাতা
তোমার পরীক্ষার খাতাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাতায় সঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর লেখার ওপরই নির্ভর করবে ভালো নম্বর।
০০ খাতা হাতে পাওয়ার পর কলম দিয়ে মার্জিন টেনে নেবে।
০০ খাতায় যা যা চেয়েছে (যেমন: রোল নম্বর, বিষয়ের নাম, কেন্দ্রের নাম) সঠিকভাবে লিখবে।
০০ খাতায় কোনো ধরনের অবাঞ্ছিত দাগ বা কিছু আঁকবে না।
হাতের লেখা
০০ হাতের লেখা সুন্দর করতে হবে।
০০ প্রতিটি বাক্য গঠন সুন্দর ও স্পষ্ট হতে হবে।
০০ এক লাইনের সাথে আরেক লাইনের যথেষ্ট ফাঁক রাখতে হবে।
০০ কাটাকাটি করে লেখার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
০০ বানান বা বাক্য গঠন ভুল হলে একটানে কেটে নতুন করে স্পষ্টাক্ষরে লেখতে হবে। সুন্দর হাতের লেখা অধিক নম্বর প্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পরীক্ষার আগের দিন


০০ পরীক্ষার আগের দিন চাপমুক্ত থাকতে হবে।
০০ হালকা অনুশীলন করতে হবে, ভালো খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
০০ পরের দিনের পরীক্ষার বিষয়ে হালকা ধারণা নিতে হবে; কিন্তু নতুন কিছু মুখস্থ করা যাবে না।
০০ কোথায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে।
পরীক্ষার হলে...
পরীক্ষার জন্য সবগুলো বিষয়ে নিশ্চয়ই ভালোভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ। পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে কারো সথে অতিরিক্ত কথা বলা যাবে না। নিজের সিটে বসে লেখা শুরু করার জন্য মনে মনে প্রস্তুতি নিবে। এর মধ্যে শিক্ষক যদি কোনো নির্দেশনা দেয় তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে।
প্রশ্ন পাওয়ার পর
পরীক্ষায় প্রশ্ন বাছাইয়ের কাজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে প্রশ্ন বাছাই করলে উত্তর লেখা সহজ হয়। নম্বরও আসে বেশি।
০০ প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর প্রথমে তা ভালো করে পড়বে।
০০ এরপর ঠিক করবে, কোন কোন প্রশ্নের উত্তর সহজে লিখতে পার।
০০ যে প্রশ্নের উত্তর ভালো পার, তা দিয়েই উত্তর লেখা শুরু করো।
 সময় বণ্টন
পরীক্ষায় উত্তর লেখার জন্য সময় বণ্টন করে নেয়া একটা জরুরী ব্যাপার। আর তোমরা এ কাজটি পরীক্ষার আগেই ঠিক করে নেবে।
০০ বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর লেখার আগেই ঠিক করে নিবে কোনটার জন্য কত সময় দেবে।
০০ সময়ের সঠিক ব্যবহার সময়মতো সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে সহযোগিতা করে।
সব প্রশ্নের উত্তর লিখবে
পরীক্ষার সময় কোনো প্রশ্নের উত্তর বাদ দিয়ে আসবে না। কোনো বিষয়ে যদি উত্তর না পার তবুও একটু চেষ্টা করে দেখবে কিছু লেখা যায় কিনা। সেখানেও কিছু না কিছু নম্বর পেতে পার।
০০ প্রশ্ন ভালো করে বুঝে নেবে, তারপর উত্তর লেখার চেষ্টা করবে।
০০ প্রশ্নের কয়টা লিখতে বলেছে, আর তুমি কয়টা উত্তর লিখেছ, তা গুনে দেখে নাও।
রিভিশন
প্রতিটি পরীক্ষা শেষে অবশ্যই রিভিশন দেবে। খাতা রিভিশন দিলে চোখে এড়ানো ভুলগুলো খুব সহজেই ধরা পড়বে।
০০ প্রশ্নের নম্বর ঠিকমতো লিখেছ কিনা, তা মিলিয়ে নাও।
০০ গণিতের উত্তর, চিহ্ন ঠিক লিখেছ কিনা, তা দেখে নাও।
০০ বাংলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে লেখকের নাম, স্থানের নাম, তারিখ, সাল ইত্যাদির বানান ঠিক লিখেছ কিনা, দেখে নাও।



তোমার প্রতিটি পাঠ্যবইকে তিনটি স্তরে ভাগ করে নেবে

তোমার প্রতিটি পাঠ্যবইকে তিনটি স্তরে ভাগ করে নেবে। সচরাচর পাঠ্য বইয়ের প্রথম স্তর থেকে বেশি সংখ্যক প্রশ্ন করা হয়, দ্বিতীয় স্তর থেকে অপেক্ষকৃত কম প্রশ্ন করা। তৃতীয় স্তর থেকে আরও কম সংখ্যক প্রশ্ন নেওয়া হয়। এবার বিগত বছরের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রগুলো দু-এক বার দেখে নিতে পারো। পরীক্ষার সময়সূচি সংগ্রহ করে, তা তুমি তোমার পড়ার টেবিলে রেখে দিবে। যাদের বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র দূরে, তারা কিভাবে যাবে অথবা কোথায় থাকবে তা তুমি, তোমার বাবা- মা এবং শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে নেবে। তুমি সারা বছর পড়েছো কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে বুঝে উঠতে পারনি; এমন বিষয়টি তুমি তোমার শিক্ষকের সহযোগিতায় বুঝে নাও। পরীক্ষার পূর্ব রাতে তোমার পড়া বিষয়গুলো কয়েকবার পড়ে নেবে। যথাসময়ে ঘুমিয়ে পড়বে।

 পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার সময়....

পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় তোমার কলম, প্রবেশপত্র, বিজ্ঞান ও অঙ্ক পরীক্ষার দিন রুলার, জ্যামিতি বক্স, রাবার সঙ্গে নেবে। তুমি, যে কোন একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। সেখানে হয়তবা তোমার স্কুলের শিক্ষক থাকবেন না। এতে তোমার ভয় পেলে চলবে না। যিনি তোমার কেন্দ্রে থাকবেন, কক্ষে পরীক্ষা নেবেন, তিনিও একজন আদর্শ শিক্ষক। সুতরাং ভয়ের কিছুই নেই। পরীক্ষা চলাকালে বাইরের অপরিচিত সরকারি কর্মকর্তারা তোমার কক্ষ পরিদর্শনে আসতে পারেন।  নতুন কোন ব্যক্তি-মানুষ পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করলে, পরীক্ষা বন্ধ করে তাঁকে দাঁড়িয়ে সম্মান করার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ, তুমি পরীক্ষার্থী।

 ‘উত্তরপত্র’ অর্থাত্ পরীক্ষার খাতা হাতে পাওয়ার পর....

‘উত্তরপত্র’ অর্থাত্ পরীক্ষার খাতা হাতে পাওয়ার পর; খাতার উপরের ভাগে যেখানে সীল দেওয়া থাকবে অথবা ছাপা অক্ষরে কিছু নির্দেশনা থাকবে, সে স্থানে তোমার প্রবেশপত্র অনুযায়ী রোল নম্বর, কেন্দ্রের নাম এবং বিষয়সহ প্রয়োজনীয় বিবরণ সঠিকভাবে লিখবে। এবার খাতার উপরে ১ ইঞ্চি এবং খাতার বামে ১ ইঞ্চি পরিমাণ ভাঁজ করে নেবে অথবা মার্জিন করেও নিতে পারো। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর, তা ভালো করে পড়ে নেবে। তোমার কাছে, সবচেয়ে সহজ মনে হচ্ছে, এমন প্রশ্নের উত্তর আগে লিখবে। তুমি যা লিখবে, তা যেনো বুঝা যায় এবং বানান যেনো শুদ্ধ হয়। কোন কিছু ভুল হলে তা একটানে কেটে দিবে। কোনক্রমেই ঘষামাজা করা যাবে না। আবারও লেখা শুরু করবে। উত্তর লেখার পূর্বে তুমি কোন্ প্রশ্নের উত্তর লিখছ; তা খাতার বামপাশে উপরে লেখবে। শুধুমাত্র আরবি পরীক্ষার সময় তা খাতার ডান পাশের উপরে লিখবে। যেমন, তুমি ১ নম্বর প্রশ্নের ‘ক’ এর উত্তর দিচ্ছ। তাহলে উত্তর লেখার পূর্বে লেখবে, ‘১নং প্রশ্নের ‘ক’ এর উত্তর’ অথবা  ‘Ans to the Q. no 1 (a)’ প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার বেলায় একই নিয়ম পালন করবে।  এবার এই নির্দেশিকার নিচে একটি দাগ টেনে নিতে পারো।

 যথাসময়ে যাতে উত্তর লেখা শেষ হয়

যথাসময়ে যাতে উত্তর লেখা শেষ হয়, সেদিকে সজাগ থাকবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট পূর্বে, তোমার পরীক্ষা কেন্দ্রে ১টি সতর্ক সংকেত বাজানো হবে। ওই সংকেত বাজানোর পর, তুমি তোমার উত্তর পত্রটি দেখে নেবে। তাতে কোন ভুলত্রুটি থাকলে সংশোধন এবং  খাতার পৃষ্ঠানম্বর ঠিক আছে কিনা তাও দেখে নেবে। খাতা জমা না নেওয়া পর্যন্ত; পরীক্ষা হল ত্যাগ করবে না। পরীক্ষা চলাকালে অন্য কোন পরীক্ষার্থীর  সাথে কোন কথা বলবে না, কারও খাতা দেখবে না, নিজের খাতাও কাউকে দেখাবে না। এ সমস্ত খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলেই তুমি সত্, যোগ্য এবং দক্ষ মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। পরীক্ষা শেষ, তুমি মনে করবে তোমার মত ভাল পরীক্ষা আর কারও হয়নি। এই নিয়ে অন্য কোন বন্ধু, বাবা-মা বা শিক্ষকদের সাথে বসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অথবা হিসাব-নিকাষ করার দরকার নেই। এতে তোমার টেনশন বেড়ে যাবে, পরের দিনের পরীক্ষা খারাপ হতে পারে। সর্বোপরি মনে রাখবে পরীক্ষা ভীতিকর পরিবেশ বা প্রতিযোগিতা  নয়, আনন্দ এবং সততার সাথে তুমি তোমার সারা বছরের শিক্ষা গ্রহণের একটি মানদণ্ড নির্ণয় করবে মাত্র।  প্রিয় পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের জন্য এই লেখাটি তৈরি করেছেন 

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী  পরীক্ষার্থী বন্ধুরা  নভেম্বর থেকে তোমাদের পরীক্ষা শুরু হবে। এটি তোমাদের জন্য প্রথম পাবলিক পরীক্ষা।  পরীক্ষা ভয়ের নয়, আনন্দের। তোমরা সদা আনন্দময় থাকবে। আনন্দময় পরিবেশে তোমাদের পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হবে। মা-বাবা শিক্ষক সবাই তোমাদের সহযোগিতা করবেন। সারা বছর যা পড়েছ তারই একটা মূল্যায়ন মাত্র এই পরীক্ষা। তোমাদের অনেক দূর যেতে হবে আর প্রতিক্ষেত্রে এ ধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।  এটা আনন্দের বিষয় যে তোমরা অল্প বয়সেই  পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নিজের মানকে যাচাই করার একটা সুযোগ পেয়ে যাচ্ছ। আগেও তোমরা পরীক্ষা দিয়েছ। সেটা ছিল স্কুলভিত্তিক বার্ষিক পরীক্ষা আর এখন তার নাম হয়েছে সমাপনী পরীক্ষা- এটাই মূলত পার্থক্য। আগেও তোমাদের ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠতে পরীক্ষা দিতে হতো, এখনো তাই। যারা তোমাদের পরীক্ষা নেবেন সবাই তোমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক । শিক্ষকরা তোমাদের সাথে বন্ধুর মতো   সহযোগিতা করবেন। সামনের কয়েকটা দিন একটু ধীর স্থির হয়ে পড়া বিষয়গুলো রিভিশন দাও,  পুনঃ আয়ত্ত করে নাও। নতুন কিছু শেখা এই মুহূর্তে আর ঠিক হবে না। এ পর্যন্ত তোমরা যা শিখেছ তা থেকেই প্রশ্ন করা হবে।



No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...