একজন ভিক্ষুককে রাজপ্রাসাদে বসবাসের স্থান করে দেয়া হলে সে অনেক সমস্যায় পড়বে। তার জীবন সহজ, স্বাভাবিক ও স্বচ্ছন্দ থাকবে না। ঠিক একইভাবে একজন রাজকুমারকে যদি ভিক্ষুকের জীবনে ছেড়ে দেয়া হয়, তা হলে সেই জীবন সুখের হবে না। প্রতি মুহূর্তে তাকে দুর্বিপাকে পড়তে হবে। এ জন্যই হয়তো বলা হয়, ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’।
ক. ‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ গল্পের রাজকুমারের নাম কী?
খ. রাজকুমারের সংকটাপন্ন জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
গ. উদ্ধৃতির অংশটি ‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ গল্পের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত আলোচনা করো।
ঘ. ‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ শীর্ষক গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো যে ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’।
উত্তর : ক. ‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ গল্পের রাজকুমারের নাম অ্যাডওয়ার্ড প্রিন্স অব ওয়েলস।
উত্তর : খ. রাজকুমারকে সংকটাপন্ন মুহূর্তে নিজ দারোয়ানের হাতে মার খাওয়া থেকে শুরু করে ভিক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
একই চেহারার ভিন্ন বালক টম ক্যান্টির সঙ্গে পোশাক পরিবর্তন করে রাজকুমার শুরুতেই তার রক্ষিত দারোয়ানের কাছে মার খায়। এরপর ঘটতে থাকে একের পর এক ঘটনা ক্যান্টির হোস্টেলে গিয়ে অপমানিত হতে হয় রাজকুমারকে। তাছাড়া টম ক্যান্টির বাবার হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে, ভিক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে, অপমান সইতে হয়েছে পথে পথে। শেষ দিকে রাজপ্রাসাদে ফিরে এলেও রাজকুমারকে যোগ্য প্রমাণ দিয়ে তবেই সিংহাসন গ্রহণ করতে হয়েছে।
উত্তর : গ. টিকে থাকার লড়াইয়ে মানুষ একেক পরিবেশে মানানসই হয়ে ওঠে এই ভাবগত সাদৃশ্যের সঙ্গে উদ্ধৃতির অংশ ও ‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ গল্পের সম্পর্ক সম্পর্কিত।
‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ গল্পে রাজকুমার অ্যাডওয়ার্ড টম ক্যান্টি নামক একই চেহারার বস্তির ছেলের সঙ্গে পোশাক পরিবর্তন করার ফলে তার বিবিধ ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বুঝি, স্থানচ্যুত হয়ে কেউ মানানসই বা সুখী হতে পারে না। উদ্দীপকেও আমরা দেখতে পাই একজন ভিক্ষুক পর্যন্ত তার স্থানে সুখী। উদ্দীপকে দেখা যায়, ভিক্ষুককে তার স্থানচ্যুত করা হলে সে তার চেয়ে বড় জায়গায় গেলেও প্রকৃত সুখ খুঁজে পাবে না বা নিজেকে মানাতে পারবে না। আবেগের বশে ক্যান্টির পোশাক পরিবর্তন করে রাজকুমার যেমন বিপদে পড়েছে, তেমনি বিপত্তিতে পড়েছে টম ক্যান্টি নিজেও। রাজকুমার রাজপ্রাসাদ ছেড়ে গিয়ে বাইরের নিয়ম-কানুনের সঙ্গে নিজেকে মোটেও মেলাতে পারেনি, অপর পক্ষে টমও রাজপ্রাসাদে নিজের ভুবন হারাতে থাকে; যার ফলে আমরা উদ্দীপকের ভিক্ষুকের অবস্থানকে সাদৃশ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। অবশ্য নিজ নিজ অবস্থানে পরবর্তীকালে আমরা টম ক্যান্টি ও রাজকুমার অ্যাডওয়ার্ডকে ফিরে থাকতে দেখি।
উত্তর: ঘ. পৃথিবীর প্রতিটি জিনিসই তাদের নিজেদের অবস্থানে সুন্দর ও স্বাভাবিক, যা ‘রাজকুমার ও ভিখারির ছেলে’ গল্পে টম ক্যান্টি ও রাজপুত্র অ্যাডওয়ার্ডদের মধ্যে অমরা খুঁজে পাই। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীই তার নিজ পরিবেশে জীবন-ধারণের বোধশক্তি অর্জন করে।
সে ছোটবেলা থেকে নিজের পরিমণ্ডল নিজস্ব পরিবেশ থেকেই সৃষ্টি করে তার ফলে সে স্বাভাবিক জীবন প্রণালি সেই প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে জীবনধারণ করে। গল্পের টম ও রাজকুমারের এই জীবনসুখী সত্যই উদ্দীপকের আলোকে ফুটে উঠেছে। আপন পরিবেশে যে কোনো মানুষই মানানসই; সুন্দর জীবনধারণের জন্য সেই পরিবেশই মানুষের সহায়ক হয়ে ওঠে।
No comments:
Post a Comment