দেশে ঋতু পরিবর্তন ঘটছে। শীত আসছে আসছে করছে। এই সময়টিতে আমরা লক্ষ
করছি বাতাসে এখন তীব্র দূষণ। কার্বন মনো-অক্সাইড, সিসা আর ভাসমান
বস্তুকণায় বাতাস এখন ঠাসা। আর এই দূষিত বাতাস আমরা প্রতিটি শ্বাসের সাথে
গ্রহণ করছি। এ অপদার্থগুলো আমাদের ফুসফুসের শ্বাসনালীতে গিয়ে অতিরিক্ত
সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করছে। ফলে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শ্বাসকষ্ট।
শ্বাসকষ্টের মধ্যে অ্যাজমা বা হাঁপানি প্রণিধানযোগ্য। হাঁপানি রোগীরা এখন
থেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ডাক্তারদের চেম্বারগুলোতে, যাতে আগামী শীতটাকে তারা
সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারেন।
হাঁপানি রোগীদের জন্য শীতকাল একটা দুঃসময়। কারণ সারা বছর বাক্সবন্দী করে রাখা শীতের কাপড়, শীতের শাল বাক্স থেকে বের করা হয়। এ সব কাপড়-চোপড়ে এক বছর ধরে জন্ম এবং বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে খালি চোখে দেখা যায় না এ ধরনের কীট যার নাম ‘মাইট’। যদি সেই বাক্সবন্দী কাপড় গরম পানিতে না ধুয়ে এবং তীব্র রোদে না শুকানো হয় তাহলে সেসব মাইটে ভর্তি পোশাক পরার সাথে সাথে ওগুলো শ্বাসনালীতে ঢুকে নিদারুণ সংবেদনশীলতা ও শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি করে অথবা নতুন করে হাঁপানি রোগীর জন্ম দেয়। তাই এই মাইটের ব্যাপারে আমাদের ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাদের ঘরে কার্পেট আছে কিংবা যারা মাস্ক না পরেই পুরনো বই-খাতা ঘাঁটেন সেখানেও কিন্তু মাইটের সর্বনাশা ছোবল আপনাকে আক্রান্ত করতে পারে।
খুব ভালো হয় যদি ঘরে কার্পেট না রাখেন। আর যদি রাখতেই হয় তাহলে কার্পেট ঝাড়– দিয়ে পরিষ্কার না করে ভ্যাকুয়াম কিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন। ঘরে যদি হাঁপানি রোগী থাকে তবে ঘর ঝাড়– না দিয়ে কাজের মেয়েকে বলুন ঘর মুছে ফেলতে। একটা কথা মনে রাখবেন, ঘরের ধুলো বাইরের ধুলো থেকে বেশি বিপজ্জনক। কারণ ঘরের ধুলোয় মাইট থাকে আর বাইরের দুলায় মাইট থাকতে পারে না রোদের উত্তাপে।
এবার একটু ধূমপানের কিছু কথা লেখার লোভ সামলাতে পারছি না। শীত আসি আসি করছে। গ্রামে কিন্তু এখন কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। এ সময় সিগারেট, বিড়ি কিংবা হুক্কার দম না নিলে যাদের কাছে অপূর্ণই থেকে যায় সব কিছু, তারা টের পাচ্ছেন না ধূমপানের কালো বিষাক্ত ধোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস আর ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা ধরনের মরণব্যাধি। আমার কাছে যখন কোনো ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস কিংবা ফুসফুসের ক্যান্সারের রোগী আসেন, তখন জিজ্ঞেস করি আপনি কি ধূমপান করতেন? শতকরা ৯৮ ভাগ ক্ষেত্রেই উত্তর আসেÑ হ্যাঁ। আমি তারপর জিজ্ঞেস করি ধূমপান বন্ধ করতে আপনাকে কেউ না করেনি? তখন উত্তর আসেÑ ‘হ্যাঁ করেছিল কিন্তু তা শুনিনি।’ তারপর সত্যিই মনে মনে বলি এখন ঠ্যালাটা বোঝেন। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় শিশুরা মারাত্মক শ্বাসনালীর প্রদাহে ভুগছে। অ্যাকিউট ব্রঙ্কিওলাইটস দেখা দিচ্ছে ছোট্ট শিশুদের মাঝে, যার বেশির ভাগই ভাইরাসে ঘটে থাকে।
শিশুর যদি কাশি ও শ্বাসকষ্টের সাথে জ্বর থাকে তাহলে দেরি না করে সত্বর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসুন। আমি ছোট্ট শিশু এবং অতি বৃদ্ধদের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ। কারণ তাদের উভয়েরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই শিথিল থাকে। রোগজীবাণু বিশেষ করে ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে জেতা খুব দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই দুই প্রান্তের রোগীদের দেরি না করেই ব্যাপক চিকিৎসা শুরু করতে হয়। শিশুদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও এ সময় বড়দের জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা নিয়ে ভুগতে দেখা যায়। কারো কারো আবার সর্দি, কাশি, গলাব্যথাও থাকে। এ ধরনের রোগীদের বেদনানাশক ওষুধ খুব সাবধানে দিতে হয়। কারণ এখনো ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপের সময় শেষ হয়ে যায়নি। ওষুধ শুরু করার আগে একটি ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে যে, তার ডেঙ্গু হয়নি। এটা জানার জন্য রক্তের প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্লেটলেট কাউন্ট যদি ঠিক থাকে তবে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট অথবা বেশি জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি মলদ্বার দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। রোগী নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় করেই অ্যান্টিবায়োটিকের ধরন ও মাত্রা ঠিক করবেন। তিনি যত দিন ও যে মাত্রায় খেতে বলবেন আপনি ঠিক তত দিনই খাবেন। এ ছাড়া প্রচুর পানি পান করুন, পাকা পেঁপে, জাম্বুরা অথবা আনারস খাবেন। যেকোনো ভাইরাস জ্বরে কিন্তু দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি হ্রাস পায়। তাই জ্বর হলে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাবেন।
একটা কথা মনে রাখবেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। তাই সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। সুস্থ সুন্দর পরিবেশে বাস করুন। ধূমপান বর্জন করুন। এখনি ঘর থেকে কার্পেট সরিয়ে দিন। শাকসবজি বেশি করে খান, কারণ তাতে প্রচুর ভিটামিন থাকে। আর ভিটামিন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। ঠাণ্ডা খাবার বর্জন করুন। এ সব সতর্কতা ও সাবধানতা গ্রহণ করলে শীতকাল হয়ে উঠবে আপনার জন্য প্রশান্তির ।
হাঁপানি রোগীদের জন্য শীতকাল একটা দুঃসময়। কারণ সারা বছর বাক্সবন্দী করে রাখা শীতের কাপড়, শীতের শাল বাক্স থেকে বের করা হয়। এ সব কাপড়-চোপড়ে এক বছর ধরে জন্ম এবং বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে খালি চোখে দেখা যায় না এ ধরনের কীট যার নাম ‘মাইট’। যদি সেই বাক্সবন্দী কাপড় গরম পানিতে না ধুয়ে এবং তীব্র রোদে না শুকানো হয় তাহলে সেসব মাইটে ভর্তি পোশাক পরার সাথে সাথে ওগুলো শ্বাসনালীতে ঢুকে নিদারুণ সংবেদনশীলতা ও শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি করে অথবা নতুন করে হাঁপানি রোগীর জন্ম দেয়। তাই এই মাইটের ব্যাপারে আমাদের ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাদের ঘরে কার্পেট আছে কিংবা যারা মাস্ক না পরেই পুরনো বই-খাতা ঘাঁটেন সেখানেও কিন্তু মাইটের সর্বনাশা ছোবল আপনাকে আক্রান্ত করতে পারে।
খুব ভালো হয় যদি ঘরে কার্পেট না রাখেন। আর যদি রাখতেই হয় তাহলে কার্পেট ঝাড়– দিয়ে পরিষ্কার না করে ভ্যাকুয়াম কিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন। ঘরে যদি হাঁপানি রোগী থাকে তবে ঘর ঝাড়– না দিয়ে কাজের মেয়েকে বলুন ঘর মুছে ফেলতে। একটা কথা মনে রাখবেন, ঘরের ধুলো বাইরের ধুলো থেকে বেশি বিপজ্জনক। কারণ ঘরের ধুলোয় মাইট থাকে আর বাইরের দুলায় মাইট থাকতে পারে না রোদের উত্তাপে।
এবার একটু ধূমপানের কিছু কথা লেখার লোভ সামলাতে পারছি না। শীত আসি আসি করছে। গ্রামে কিন্তু এখন কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। এ সময় সিগারেট, বিড়ি কিংবা হুক্কার দম না নিলে যাদের কাছে অপূর্ণই থেকে যায় সব কিছু, তারা টের পাচ্ছেন না ধূমপানের কালো বিষাক্ত ধোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস আর ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা ধরনের মরণব্যাধি। আমার কাছে যখন কোনো ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস কিংবা ফুসফুসের ক্যান্সারের রোগী আসেন, তখন জিজ্ঞেস করি আপনি কি ধূমপান করতেন? শতকরা ৯৮ ভাগ ক্ষেত্রেই উত্তর আসেÑ হ্যাঁ। আমি তারপর জিজ্ঞেস করি ধূমপান বন্ধ করতে আপনাকে কেউ না করেনি? তখন উত্তর আসেÑ ‘হ্যাঁ করেছিল কিন্তু তা শুনিনি।’ তারপর সত্যিই মনে মনে বলি এখন ঠ্যালাটা বোঝেন। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় শিশুরা মারাত্মক শ্বাসনালীর প্রদাহে ভুগছে। অ্যাকিউট ব্রঙ্কিওলাইটস দেখা দিচ্ছে ছোট্ট শিশুদের মাঝে, যার বেশির ভাগই ভাইরাসে ঘটে থাকে।
শিশুর যদি কাশি ও শ্বাসকষ্টের সাথে জ্বর থাকে তাহলে দেরি না করে সত্বর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসুন। আমি ছোট্ট শিশু এবং অতি বৃদ্ধদের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ। কারণ তাদের উভয়েরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই শিথিল থাকে। রোগজীবাণু বিশেষ করে ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে জেতা খুব দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই দুই প্রান্তের রোগীদের দেরি না করেই ব্যাপক চিকিৎসা শুরু করতে হয়। শিশুদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও এ সময় বড়দের জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা নিয়ে ভুগতে দেখা যায়। কারো কারো আবার সর্দি, কাশি, গলাব্যথাও থাকে। এ ধরনের রোগীদের বেদনানাশক ওষুধ খুব সাবধানে দিতে হয়। কারণ এখনো ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপের সময় শেষ হয়ে যায়নি। ওষুধ শুরু করার আগে একটি ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে যে, তার ডেঙ্গু হয়নি। এটা জানার জন্য রক্তের প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্লেটলেট কাউন্ট যদি ঠিক থাকে তবে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট অথবা বেশি জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি মলদ্বার দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। রোগী নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় করেই অ্যান্টিবায়োটিকের ধরন ও মাত্রা ঠিক করবেন। তিনি যত দিন ও যে মাত্রায় খেতে বলবেন আপনি ঠিক তত দিনই খাবেন। এ ছাড়া প্রচুর পানি পান করুন, পাকা পেঁপে, জাম্বুরা অথবা আনারস খাবেন। যেকোনো ভাইরাস জ্বরে কিন্তু দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি হ্রাস পায়। তাই জ্বর হলে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাবেন।
একটা কথা মনে রাখবেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। তাই সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। সুস্থ সুন্দর পরিবেশে বাস করুন। ধূমপান বর্জন করুন। এখনি ঘর থেকে কার্পেট সরিয়ে দিন। শাকসবজি বেশি করে খান, কারণ তাতে প্রচুর ভিটামিন থাকে। আর ভিটামিন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। ঠাণ্ডা খাবার বর্জন করুন। এ সব সতর্কতা ও সাবধানতা গ্রহণ করলে শীতকাল হয়ে উঠবে আপনার জন্য প্রশান্তির ।
No comments:
Post a Comment