- ৬ থেকে ৮ মাস বয়সী শিশুকে দিনে অন্তত ২-৩ বার বাড়তি খাবার খাওয়ান, পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়ানো অবশ্যই চালিয়ে যাবেন।
- ৯ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে দিনে অন্তত ৩-৪ বার বাড়তি খাবার খাওয়ান। পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়ানো অবশ্যই চালিয়ে যাবেন।
- পরিবারের স্বাভাবিক খাবার থেকে শিশুর বাড়তি খাবার তৈরি করে খাওয়ান।
- বাড়তি খাবার হিসেবে শিশুকে চাল-ডাল-তেল-সবজি দিয়ে নরম খিচুড়ি তৈরি করে অথবা পরিবারের স্বাভাবিক খাবার থেকে নরম করে সঙ্গে এক চামচ অতিরিক্ত তেল মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
- সহজে পাওয়া যায় এমন ফল-কলা, পেঁপে, আম ইত্যাদি শিশুকে সাধ্যমতো খাওয়াতে হবে।
- প্রতি মাসে শিশুর ওজন বাড়ে। তাই শিশুর ওজন ঠিকমতো বাড়ছে কি না জানার জন্য প্রতি মাসে শিশুকে পুষ্টি কেন্দ্রে নিয়ে ওজন করে নিন। বৃদ্ধি সম্পর্কে জানুন ও পরামর্শ গ্রহণ করুন।
- অসুস্থ শিশুকে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে পারেন।
- ৬ মাসের কম বয়সী শিশুর জন্য বুকের দুধই সেরা খাদ্য।
- অসুস্থ শিশুকে তার প্রিয় খাবারগুলো বারবার খেতে দিন।
শিশু একবারে যে খাবার খেতে পারে সেই পরিমাণ খাদ্য তৈরি করতে হবে। তৈরি অতিরিক্ত খাবার পরিবারের অন্যরা খেয়ে নেবে। শিশুদের খাবার-দাবার সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, বিশেষ করে দুধ। মায়ের দুধে অবশ্য এসব ঝামেলা নেই। তবে যেসব মা চাকরি করেন বা বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে কাটান তারা বুকের দুধ হাত দিয়ে চেপে বের করে কাপ বা বাটিতে রেখে যেতে পারেন। মায়ের বুকের দুধ বাইরে রাখলে ৮ ঘণ্টা এবং ফ্রিজে রাখলে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। গরুর দুধ খাওয়ানোর আগে প্রতিবারই অন্তত ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। খোলা রাখলে কৌটার গুঁড়োদুধ সহজে নষ্ট হয়ে যায়। কৌটার গায়ে ‘ব্যবহার সীমার তারিখ’ দেখে নেবেন এবং কৌটা সর্বদা শুকনা ও ঠাণ্ডা জায়গায় রাখবেন। নতুন কৌটা খোলার পর ৩ সপ্তাহের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয় এবং প্রতিবার খোলার পর ভালোভাবে ঢাকনা লাগিয়ে বন্ধ করে রাখবেন। কৌটার দুধ শিশুকে খাওয়ানোর আগে প্রতিবার তৈরি করবেন। ২-৩ বার খাওয়ানোর জন্য একবারে দুধ তৈরি করবেন না। তরল বা গুঁড়োদুধে কখনো হাত লাগাবেন না। তরল দুধে কখনো আঙুল ডুবিয়ে গরম পরীক্ষা করবেন না। নিজের হাতের পিঠে কয়েক ফোঁটা দুধ ঢেলে গরম পরীক্ষা করুন।
সুজি, খিচুড়ি ইত্যাদি বা অন্যান্য রান্না করা খাবার ফ্রিজে না রাখলে রান্নার ২ ঘণ্টা পর থেকে নষ্ট হওয়া শুরু করে। অতএব রান্না করা খাদ্য ২ ঘণ্টা পর শিশুকে খাওয়াবেন না। আর রান্নার ২ ঘণ্টার মধ্যে ফ্রিজে রাখলে ভাত ব্যতীত অন্যান্য খাবার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত রেখে খাওয়ানো যায়, তবে ২৪ ঘণ্টার বেশি না রাখাই ভালো। ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার বেশি সময় রেখে কোনো খাবার খাওয়ানোর ইচ্ছা থাকলে তা ডিপফ্রিজে রাখুন। মনে রাখবেন বারবার ফ্রিজ খুললে বা ফ্রিজের দরজা অনেকক্ষণ ধরে খুলে রাখলে ফ্রিজের ভেতরের ঠাণ্ডা তাপমাত্রা সঠিক থাকে না। খাওয়ানোর আধঘণ্টা আগে ফ্রিজ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য বের করে ঢেকে রাখুন, ঠাণ্ডা কেটে গেলে শিশুকে খেতে দিন অথবা ফ্রিজ থেকে বের করার পর খাবারের পাত্রটি একটি গরম পানির পাত্রে আধাআধি ডুবিয়ে রেখে ঠাণ্ডা কাটিয়ে নিন। অবশেষে মনে রাখবেন আপনি যত যত্ন করেই শিশুর খাবার বানান না কেন বা সংরক্ষণ করুন না কেন খাওয়ানোর সময় অপরিষকার হাতের সপর্শ, দূষিত পানিতে ধোয়া, অপরিষকার পাত্র বা চামচ দিয়ে খাওয়ালে শিশুর পেটে অসুখ হবে। আরো লক্ষ করুন, ডিপফ্রিজে রাখা খাদ্যের মধ্যেও কিন্তু জীবাণু সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। তাই কাটা মাছ-মাংস ইত্যাদি ডিপফ্রিজ থেকে বের করে রেখে পুরোপুরি ঠাণ্ডা কাটিয়ে নেবেন, তা না হলে রান্না করার সময় মাছ বা মাংসের বড় টুকরার মধ্যবর্তী স্থানে ঠাণ্ডার কারণে ভালোভাবে তাপ নাও পৌঁছাতে পারে। তাপ ভালোভাবে না পৌঁছার কারণে ওই মধ্যবর্তী স্থানের জীবাণু ধ্বংস হবে না এবং ওই খাদ্য শিশু খেলে অচিরেই পেটের অসুখে আক্রান্ত হবে।
No comments:
Post a Comment