Friday, August 31, 2012

বাংলা ১ম পত্র: একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী

রমেনবাবু একমাত্র কন্যা দীপার বিয়েতে শ্বশুরবাড়ির চাহিদা মেটাতে দশ ভরি স্বর্ণালংকার ও লক্ষ টাকা দিয়েছেন। দীপা শিক্ষকতা করে; কবিতা পাঠ ও এর আলোচনায় তার অবসর কাটে। সংসারের কাজেও সে পারদর্শী। সৎপাত্রে কন্যাদান হয়েছে ভেবে রমেনবাবু মৃত্যুর আগে তাঁর বিষয়-সম্পত্তি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দান করেন।
ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
খ) ‘আইবুড়ো’ মেয়ে বলতে ‘হৈমন্তী’ গল্পে কী বোঝানো হয়েছে?
গ) ‘হৈমন্তী’ চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য দীপার মধ্যে লক্ষ করা যায়? বুঝিয়ে দাও।
ঘ) গৌরী শঙ্করবাবু ও রমেনবাবুর চরিত্রের একটি তুলনামূলক আলোচনা করো।
উত্তর: ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
উত্তর: খ) ‘আইবুড়ো মেয়ে’ বলতে ‘হৈমন্তী’ গল্পে অবিবাহিত বোঝানো হয়েছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ ছোটগল্প ‘হৈমন্তী’তে গল্পের নায়িকা হৈমন্তীকে ‘আইবুড়ো’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হৈমন্তীকে তার শ্বশুর নিন্দার্থে ‘আইবুড়ো’ বলেছিল। যদিও শব্দটির অর্থ অবিবাহিত, কিন্তু এই গল্পে শব্দটি হৈমন্তীর বয়স নিয়ে সমালোচনাসূচক করা হয়েছে। তৎকালীন সমাজে কন্যাকে দশ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে দেওয়ার প্রচলন ছিল। কিন্তু হৈমন্তীর বিয়েকালীন বয়স ছিল সতেরো, যা সমাজের সমালোচনার বস্তু ছিল। যৌতুকের লোভে অপুর মা-বাবা অপুকে বেশি বয়সী কনে বিয়ে করিয়েছিল এবং এ বয়সটি জনসমক্ষে চেপে রাখতে চেয়েছে এবং হৈমন্তীকে ‘আইবুড়ো’ বলে নিন্দা করা হয়েছিল।
উত্তর: গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘হৈমন্তী’ গল্পের সঙ্গে উদ্দীপকের দীপা চরিত্রের শিক্ষা বা বই পড়ার বিষয়টির মিল লক্ষ করা যায়। হৈমন্তী ও দীপা উভয়েই উচ্চশিক্ষিতা। তাদের মধ্যে আধুনিক চিন্তাচেতনাসহ সব মানবীয় গুণ দৃশ্যমান, যা তাদের সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
বিয়ের পর হৈমন্তী সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চেষ্টায় ছিল। কখনো মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করেনি। অপর দিকে, উদ্দীপকের দীপা নানা রকম বাধাবিপত্তি পেরিয়ে শিক্ষকতা করছে। হৈমন্তীর শখ বই পড়া। হৈমন্তীর বই পড়ার শখের কথা জানতে পেরে স্বামী অপুও চুপিসারে তাকে বিভিন্ন বিষয়ের বই এনে দিত।
অপর দিকে, উদ্দীপকের দীপাও শিক্ষকতা, সংসার সামাল দেওয়ার কাজে শত ব্যস্ততার মাঝেও বই পড়তে পছন্দ করে। তাই বলা যায়, হৈমন্তীর বই পড়ার শখটি উদ্দীপকের দীপার মধ্যেও লক্ষ করা যায়।
উত্তর: ঘ) উদ্দীপকের রমেনবাবুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘হৈমন্তী’ গল্পের গৌরী শঙ্করবাবুর মিল পাওয়া যায়, উভয়েই কন্যাকে যৌতুক দিয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন। রমেনবাবু ও গৌরী শঙ্করবাবু উভয়েরই একটি করে কন্যা। রমেনবাবুর কন্যা দীপা শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সংসারে সুখী হতে পেরেছিল। কিন্তু গৌরীবাবুর কন্যা হৈমন্তী শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সংসারে সুখী হতে পারেনি বরং সেখানে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হৈমন্তী তিলে তিলে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিল। রমেনবাবু তাঁর মেয়ের শ্বশুরপক্ষের দাবি করা টাকা ও গয়না পরিশোধ করতে পারলেও গৌরী শঙ্করবাবু ছিলেন এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ। কন্যার বিয়ের খরচের পরও উদ্বৃত্ত অর্থ-কড়ি রমেনবাবু সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দান করেছিলেন। অন্যদিকে হৈমন্তীর বাবা গৌরী শঙ্করবাবু ধারদেনা করে পনেরো হাজার নগদ টাকা ও পাঁচ হাজার টাকার গয়না দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন।
কন্যাদানের ক্ষেত্রে রমেনবাবু সফল হলেও গৌরী শঙ্করবাবু ছিলেন এক হতভাগা পিতা। মেয়ের যৌতুকলোভী শ্বশুর-শাশুড়ির চাহিদা মেটাতে না পারার দায়ে আদরের সন্তান হৈমন্তী মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিল।

1 comment:

Unknown said...

আপনার দেওয়া প্রশ্ন খুব সুন্দর হয়েছে।দয়া করে আরো লিখবেন।

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...