Saturday, August 4, 2012

সন্তানের যত্ন নিতে

সন্তানের যত্ন নিতে...

বয়সসীমা ২ থেকে ৮ বছর
  • একদম শৈশব থেকেই যেসব সমস্যা শুরু হয় তার মধ্যে অন্যতম বাচ্চা খেতে চায় না।
  • বাচ্চাকে তার মতো করে খেতে দিন।
  • খাবার টেবিলে বসে খাওয়ান। বাড়ি ঘুরে কিংবা টিভি দেখিয়ে খাওয়ানোর অভ্যাস করবেন না।
  • ক্ষিদে লাগতে দিন। প্রয়োজনে দিনের এক বেলার খাবার বাদ দিন। ক্ষিদে পেলে এমনি খাবে।
  • বাড়ির তৈরি সুস্বাদু খাবার দিন। তবে এক খাবার প্রতিদিন দেবেন না।
  • নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ান।
চিপসের মতো স্ল্যাকস যত পারবেন কম খাওয়াবেন। এই বয়সে আরো একটি গুরুতর সমস্যা হলো বাচ্চা কথা শোনে না।
  • বাচ্চাকে পরিণত মানুষ হিসেবে দেখুন।
  • বাচ্চাদের মতামতকে গুরুত্ব দিন। ‘ও তো বাচ্চা, কিছু বোঝে না’ এ ধরনের মন্তব্য ওদের সামনে করবেন না।
  • নিজেদের আচরণ ঠিক রাখুন। কারণ এই বয়স থেকেই বাচ্চারা অনুকরণ করতে শেখে।
  • বাচ্চার সমস্যার কথা মন দিয়ে শুনুন। তুচ্ছ মনে হলেও শুনুন। কারণ ওখানেই লুকিয়ে বড় বড় সমস্যার বীজ।
  • অতিরিক্ত শাসন থেকে কখনো যেন সন্তান কষ্ট না পায় অর্থাৎ যাতে হতাশাগ্রস্ত না হয়।
  • অফিস অথবা ব্যবসার টেনশন বাড়িতে আনবেন না।
  • এই বয়সে বাচ্চার আঙুল চোষার মতো বিভিন্ন বদ অভ্যাস সৃষ্টি হয়।
  • মনে থাকা উদ্বেগ, আকাঙ্ক্ষা, নিরাপত্তার অভাবে দুই-আড়াই বছর বয়সে মুদ্রাদোষ তৈরি হয়।
  • বাবা-মায়ের একাকিত্বে অনেক বাচ্চা মনে করে তারা আর তাদের ভালোবাসা পাচ্ছে না।
  • রাতারাতি মুদ্রাদোষ ছাড়ানো সম্ভব নয়। মুদ্রাদোষ ছাড়ানোর জন্য ছোটখাটো উপহার দিন।
  • বিছানা ভেজানোর সমস্যা এড়াতে পেপার টয়লেট ট্রেনিং দিন। সন্ধ্যার পর পানি খাওয়ানোর পরিমাণ কমান। মাঝরাতে একবার উঠিয়ে টয়লেট করান।
  • ৫ বছরের পরও বিছানা ভেজালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাচ্চারা যখন প্রথম স্কুলে ভর্তি হয় তখন অস্বস্তিবোধ করে। এটা খুবই স্বাভাবিক।
  • নিজে সঙ্গে করে নিয়ে বাইরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
  • স্কুলের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
  • পরীক্ষাভীতি এড়াতে তাকে বোঝান পরীক্ষাটি তেমন ভয়ের কিছু না।
  • ভয় কাটাতে ভয় দেখাবেন না। কাঁটা দিয়ে সব সময় কাঁটা তোলা যায় না।
  • যুক্তি দিয়ে ভয় কাটানো যায় না। বাচ্চাদের সাহস দিন।
  • যে জিনিসে বাচ্চা ভয় পায় সেটা নিয়ে আলোচনা বা হাসাহাসি করবেন না।
  • চাকরিজীবী মায়েরা বাচ্চার আয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন। অসময়ে বাড়িতে ফিরে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন।
ছোট মেয়ের বাবা যারা তাদের জন্য রয়েছে বোঝার কিছু বিষয়
  • পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ছোট মেয়েটির ধারণা শেখা শুরু হয় বাবার মাধ্যমেই।
  • মায়ের বিকল্প হতে চাইবেন না। বরং পার্কে গিয়ে মজা করুন। বাচ্চার প্রিয় কার্টুন বা হিরোর মতো মজা করে গান গেয়ে শোনান।
  • আগে বন্ধু হবেন পরে অভিভাবক।
  • বাচ্চা যদি গান, ছবি আঁকা শেখে তার সাথে আপনিও করুন।
  • আপনি বাবা বলে, পুরুষ বলে কোমল মনোভাব থেকে বিরত থাকবেন না। এর ফলে দূরত্ব বাড়বে। স্নেহ মমতা প্রকাশ করুন। মেয়েরা ভালোবাসা ও যত্ন পেতে পছন্দ করে। বন্ধন দৃঢ় হবে।
  • বাবা বলে প্রভুত্ব না খাটিয়ে খোলাখুলি কথা বলে সমস্যার সমাধান করুন।
  • আপনার যথাযথ সঙ্গ আপনার মেয়ের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে।
  • মাঝে মাঝে বাচ্চাদের মধ্যে একটি সমস্যা দেখা দেয়, যা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত
  • স্কুলে সদ্য ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে অন্যমনস্কতা ও দূরন্তপনা লক্ষ করা যায়।
  • আড়াই থেকে চার বছর বয়সের মধ্যে এডিএইচএডি হয়।
  • উদ্বেগ, অবসাদ থেকেই এই রোগ হয়।
  • পুরো প্রশ্ন না শুনেই উত্তর দেয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
  • একটি কাজ শেষ না করে আরেকটি কাজ শুরু করা।
  • খেলনা, পেনসিল, বই ইত্যাদি কোথায় রেখেছে তা মনে রাখতে না পারা।
  • পরিবারে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখুন।
  • ধৈর্যহারা হবেন না।
  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
বয়সসীমা ৮ থেকে ১২ বছর
শিশুদের মধ্যে আত্মমর্যাদাবোধ খুব প্রখর। এ জায়গায় বিভিন্ন সমস্যা হয়
  • অন্যের সামনে বকাবকি করবেন না।
  • আপনি ওর সম্মানের ব্যাপারে সচেতন, সেটা ওকে বুঝতে দিন।
  • স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে শ্রদ্ধা করুন। তাতে আপনার মিশুও শ্রদ্ধাবোধ শিখবে।
  • ছোট ভুল স্বীকার করতে শেখান।
  • অন্যের প্রতি দায়িত্ববান হতে শেখান।
  • ভালো কাজে বাচ্চাদের উৎসাহ দিন।
  • সাফল্য না পেলে হতাশাজনক কথা বলবেন না।
  • সিদ্ধান্ত নিতে শেখান। সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করুন। তবে চাপিয়ে দেবেন না।
অনেক শিশুর মধ্যে মারধর বা আক্রমণাত্মক আচরণ দেখা যায়
  • আড্ডার ছলে ক্ষোভ ও অপ্রাপ্তির কথা বোঝার চেষ্টা করুন।
  • সন্তানের বন্ধুদের সাথেও বন্ধুর মতো শিশুন।
  • সারাক্ষণ ঘাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবেন না। ওদেরকে ওদের মতো থাকতে দিন।
  • জ্ঞান না দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বোঝান।
  • আমরা তোমার জন্য এত করছি এ ধরনের কথা বলবেন না।
  • টেলিভিশন বা সিনেমার প্রভাব খুব প্রত্যক্ষ। তাই বলে দেখা বন্ধ করে দেবেন না। যুক্তি দিয়ে বোঝান।
অনেক বাচ্চা বাসার কাজের লোকের সাথে দুর্ব্যবহার করে
  • এ জন্য অনেক ক্ষেত্রেই পারিবারিক পরিবেশ দায়ী।
  • বাড়ির অন্য কেউ যাতে কাজের লোকের সাথে খারাপ ব্যবহার না করে।
  • বাচ্চা করে ফেললে কাজের লোকের সামনে বকাবকি না করে পরে তাকে বোঝান।
  • কাজের লোককে সম্বোধন করতে শেখান।
  • বোঝার চেষ্টা করুন যে কাজের লোক এখানে চাকরি করতে এসেছে।
  • কাজের লোক নয় কারো সাথেই খারাপ ব্যবহার করতে হয় না বোঝান।
  • বাচ্চাকে নিজের কাজ নিজে করতে শেখান।
অনেক বাচ্চার মধ্যে তোতলামি করার প্রবণতা দেখা যায়
  • দুই থেকে দশ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে সাধারণত এই সমস্যা দেখা যায়।
  • আপনজনদের সাথে স্বাভাবিক থাকলেও শিক্ষক, অপরিচিত মানুষ দেখলে তোতলায়।
  • অতিরিক্ত আদর ও শাসনও এর কারণ হতে পারে।
  • জন্মের পর অপুষ্টি, অসুখ, অন্য সন্তানের প্রতি বেশি আদর ইত্যাদি থেকেও তোতলামি হতে পারে।
বয়সসীমা ১২ থেকে ১৬ বছর
এই বয়সে শিশুদের মধ্যে অনেক সময় সবজান্তা ভাব দেখা যায়।
  • এই বয়সে আমাকে কেউ বোঝে না এমন মনোভাব খুব সহজেই সৃষ্টি হয়।
  • আত্মসম্মানে লাগে এমন কথা বলবেন না।
  • বাচ্চা বয়সের মতো এ বয়সেও বাবা-মায়ের সাহচর্য প্রয়োজন।
  • স্কুল থেকে ফেরার পর মায়েরা সময় দিন।
  • বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মিশতে দেবেন কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেন আপনি দূরে সরে না যান।
  • খারাপ আচরণে না বকে বোঝার এবং বোঝানোর চেষ্টা করুন।

No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...