Saturday, December 1, 2012

বাংলা প্রথম পত্রের ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাস থেকে একটি নমুনা সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

বাংলা প্রথম পত্রের ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাস থেকে একটি নমুনা সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
১। গাঁয়ের চাষিরা মিলিয়াছে আসি মোড়লের দলিজায়,
গল্পে গানে কী জাগাইতে চাহে আজিকার দিনটায়?
মাঝখানে বসে গাঁয়ের বৃদ্ধ, করুণ ভাটির সুরে
আমির সাধুর কাহিনী কহিছে সারাটা দলিজা জুড়ে
(ক) ‘হাজার বছর ধরে’ কোন জাতীয় রচনা?
(খ) মন্তু ও টুনি ধলপহরে শাপলা তুলতে যায় কেন?
(গ) উদ্দীপকটি ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের কোন দিকটি প্রতিফলিত করে? বর্ণনা দাও।
(ঘ) উদ্দীপকের বৃদ্ধরাই আমাদের আবহমান গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রাণ-পুরুষÑ ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাস অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : (ক) ‘হাজার বছর ধরে’ একটি সামাজিক উপন্যাস।
(খ) মন্তু ও টুনি একসাথে কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত কাটাতে ধলপহরে শাপলা তুলতে যায়।
বিখ্যাত ঔপন্যাসিক জহির রায়হান রচিত ‘হাজার বছর ধরে’ শীর্ষক উপন্যাসে দেখা যায়, টুনি তের-চৌদ্দ বছর বয়সী এক চপল কিশোরী এবং
মন্তু তার সমবয়সী। টুনি মন্তুর সাথে সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এবং তাই তারা ধলপহরে  একসাথে শাপলা তুলতে যায়।
(গ) উদ্দীপকটি ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের গ্রামীণ সস্তা-বিনোদন ব্যবস্থার দিকটি প্রতিফলিত করে।
আলোচ্য ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে দেখা যায়, গ্রামীণ মানুষেরা সারা দিন অনেক কাজের পর রাতে বিনোদনের ব্যবস্থা করে। শিকদারবাড়ির উঠানে সকলে জমায়েত হয় সুরত আলীর পুঁথি শোনার জন্য। সুরত আলী সারা রাত ঢুলে ঢুলে ভেলুয়া সুন্দরীর পুঁথি, কমলা সুন্দরীর পুঁথি পাঠ করে। আর সেসব রূপকথার সাথে একাকার হয়ে যায় গ্রামের সেসব শ্রোতাদের আবেগ। তা ছাড়া বিভিন্ন হাটে সার্কাস-পার্টি, যাত্রা-পালা ইত্যাদিও তাদের বিনোদনের উৎস।
আলোচ্য উদ্দীপকে দেখা যায়, মোড়লের দলিজায় মাঝখানে বসে গাঁয়ের বৃদ্ধ করুণ ভাটির সুর আমির সাধুর কাহিনী পড়ছে। আর তা শোনার জন্য গাঁয়ের চাষিরা সেখানে জমায়েত হয়েছে।
(ঘ) ‘উদ্দীপকে বৃদ্ধরাই আমাদের আবহমান গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রাণ-পুরুষ।’- মন্তব্যটি যথার্থ।
আলোচ্য ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে দেখা যায়, সারা দিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খাটে দারিদ্র্যের কশাঘাতে নিষ্পেষিত গ্রামীণ মানুষ। তারা কাজ শেষে রাতের বেলায় শিকদারবাড়ির উঠানে মিলিত হয় পুঁথি শুনতে। সুরত আলী সারা রাত সুর করে ‘ভেলুয়া সুন্দরীর’ পুঁথি, ‘কমলা সুন্দরীর’ পুঁথি ইত্যাদি পাঠ করে। আর তা শুনে আবেগে বশীভূত হয়ে পড়ে তারা। এটাই তাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি বা বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম।
তেমনি আলোচ্য উদ্দীপকে দেখা যায়, মোড়লের দলিজায় বসে গাঁয়ের বৃদ্ধ সুর করে আমির সাধুর কাহিনী পড়ে আর গ্রামের সব চাষি এসে সেখানে মিলিত হয়। গল্পে গানে তারা মেতে উঠতে চায়।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেেিত বলা যায় যে, উদ্দীপকের বৃদ্ধ যেমন সুর করে আমির সাধুর কাহিনী পড়ে গাঁয়ের চাষিদের বিনোদন দেয়; তেমনি ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের সুরত আলীও সুর করে বিভিন্ন পুঁথি শুনিয়ে গ্রামের লোকদের বিনোদন দেয়। আর তাদের বিনোদনের অন্যতম উৎস এটি। তাই এটিই তাদের গ্রামীণ সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং উদ্দীপকের বৃদ্ধরা তথা সুরত আলী আমাদের আবহমান গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রাণপুরুষ।

No comments:

Post a Comment

Composition on Female Education in Bangladesh for Examination

  Female Education in Bangladesh Education is a light to which everybody has the equal right. Education is the backbone of a nation. The ...