পাঠে মনোযোগও বাড়ানো যায়
‘মনোযোগ’
দিয়ে পড়াশোনা করো’—এ উপদেশ পায়নি এমন শিক্ষার্থী বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে
না। আর এ উপদেশ দেওয়ার জন্য লোকেরও কোন অভাব নেই। শিক্ষার্থীরাও জানে
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হলে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু তার পরও
অগণিত শিক্ষার্থীর কাছে পড়া এক বিরক্তিকর কাজ, কঠিন কাজ। তারা পড়ার টেবিলে
বসে বাধ্য হয়ে। পড়ে যন্ত্রচালিতের মতো—যার অনেক কিছুই পরে মনে করতে পারে
না। আর সব সময় ছটফট করে পড়ার টেবিল ছেড়ে উঠে যাওয়ার জন্য। পড়ার বিষয়বস্তু
মনে রাখার জন্য দরকার কার্যকর পড়াশোনা, আর তা সম্ভব মনোযোগ দিয়ে পাঠচর্চার
মাধ্যমেই।
পড়াশোনায় মনোযোগ কীভাব বাড়ানো যায়—তা নিয়েও পরিচালিত হয়েছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর গবেষণা। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলোই কাজে লাগায় স্টাডি-কাউন্সেলিং সেন্টারগুলো।
পড়াশোনায় মনোযোগ যারা বাড়াতে চাও, তাদের প্রথমেই স্বীকার করে নিতে হবে কিছু ত্যাগ ও দায়-দায়িত্ব। এটা স্বীকার করে নিতে হবে, তোমাদের অগ্রজেরা যারা কর্মজীবনে নানা দায়-দায়িত্ব পালন করছে নিষ্ঠার সঙ্গে, তেমনি শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাকেও পালন করতে হবে পড়াশোনার দায়িত্ব। কারণ এটাই তোমার মূল কাজ বা পেশা।
প্রকৃত মনোযোগ না দিয়ে যদি তোমার বইয়ের বাক্যগুলো একটার পর একটা পড়ে যাও, তাহলে সেগুলো কি পড়ে ঠিকমতো মনে করতে পারবে? নিশ্চয়ই নয়। এ ধরনের পড়াকে বলা হয় ক্যাজুয়াল রিডিং। ক্যাজুয়াল রিডিংয়ের মাধ্যমে পাঠ আয়ত্ত করা কঠিন। এভাবে পড়ার বিয়য়গুলো খুব সহজেই তুমি ভুলে যাবে। অথচ এ পড়ার পেছনে তোমার যে সময় ও শ্রম ব্যয় হয়েছে তা আর কখনোই ফিরে আসবে না। অধিকন্তু এ ধরনের পড়াশোনা বিরক্তিকর। মনোযোগের সাহায্যে না বুঝে পড়া সময় ও শক্তির অপচয় মাত্র।
মনোযোগের মূল রহস্য: মনোযোগ বাড়ানোর বিষয়টি কোন বড় কিংবা জটিল কৌশলগত বিষয় নয়। তুমি যদি তোমার পড়ায় মনোযোগ বাড়াতে চাও, তাহলে তোমাকে শুধু তোমার বিষয়টিকে উপভোগ্য করে তুলতে হবে। পাঠ্য বিষয়ের প্রতি তোমার আগ্রহকে বাড়াতে হবে।
আগ্রহ বাড়াবে কীভাবে: তথ্য সব সময় আকর্ষণীয় কিংবা আগ্রহ উদ্দীপক হয় না। কিন্তু অধিকাংশ পাঠ্যবই নানা তথ্যে ঠাসা। এ কারণে এসব পাঠ্যবই ছাত্রছাত্রীদের আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলে। কিন্তু এসব তথ্য তখনই আকর্ষণীয় এবং কৌতূহলোদ্দীপক হয়ে ওঠে, যখন আমরা তার মূলগত ধারণাগুলো আবিষ্কার করতে সমর্থ হই—অর্থাত্ বিষয়গুলো বুঝতে পারি। এ কারণে তুমি যদি তোমার পাঠ চর্চার সময়টুকু আগ্রহপূর্ণ ও মজাদার করে তুলতে চাও, তাহলে তোমাকে পঠিত বিষয়ের মূল ধারণাটি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। বাক্যগুলো শুধু আওড়ানো নয়, তোমাকে অনুধাবন করতে হবে। তুমি কী শিখলে, বইয়ের লেখাগুলো যা বোঝাতে চেয়েছে তা তুমি কতটা বুঝতে পারলে।
পড়া থামাবে কখন: অধিকাংশ শিক্ষার্থীই পড়া থামিয়ে দেয় যখন-তখন। কিন্তু পরিকল্পনামাফিক পাঠবিরতি পড়াশোনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু অপরিকল্পিত পাঠবিরতি পড়াশোনার ক্ষতি করে থাকে। পড়া থামিয়ে দেওয়ার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী করা হয় বাইরের নানা ঘটনাবলিকে। এ কারণে তোমাকে একটি উপযুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করতে হবে অথবা তোমার পড়ার স্থানটিকেই সেভাবে তৈরি করে নিতে হবে।
বহিরাগতদের উপস্থিতি: পড়ার সময় কারও উপস্থিতি মনকে বিক্ষিপ্ত করে তোলে। এ কারণে যতটা সম্ভব নিরিবিলিতে পড়াশোনা করতে হবে। আর যদি কারও উপস্থিতি ঘটেও তাহলে তাকে অদৃশ্য বলেই বিবেচনা করবে।
শব্দ ও সংগীত: পড়াশোনার জন্য নীরব পরিবেশই উত্তম। কেউ কেউ একেবারে নীরব পরিবেশই পছন্দ করে থাকে। টিভি রুমের শব্দ কিংবা সংগীতের মূর্ছনা মনকে অবশ্যই কিছু না কিছু বিক্ষিপ্ত করে তোলে।
বিক্ষিপ্তচিত্ততার ব্যক্তিগত কারণ: একান্ত ব্যক্তিগত কারণেও পড়াশোনার সময় চিত্ত বিক্ষিপ্ত হতে পারে। একে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে—১। শারীরিক ও (২) মানসিক। শারীরিক কারণে চিত্তের বিক্ষিপ্ততা নানাভাবে হতে পারে। সেটা হতে পারে ক্ষুধা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা কিংবা আরামহীনতার কারণে।
খুব ক্ষুধার্ত অবস্থায় পড়াশোনা করবে না। আবার অন্যদিকে পূর্ণমাত্রায় খাওয়া-দাওয়ার অব্যবহিত পরে পড়াশোনা করাও ভালো নয়। পড়াশোনায় মনোযোগের জন্য তোমাকে হাই-প্রোটিনযুক্ত অল্প বা স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। এ সময় গৃহীত পানীয় অবশ্যই নন অ্যালকোহলিক হবে। এছাড়া ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রাও হবে সীমিত।
শারীরিক ক্লান্তি নিয়ে পড়াশোনা না করে সবচেয়ে সজাগ বা চাঙ্গা সময়ে নিবিড়ভাবে পড়া উচিত। পড়াশোনা খুব ক্লান্তিকর মনে হলে একটু হাঁটাহাঁটি করবে। সামান্য হালকা ব্যায়াম করবে এবং কয়েকবার নিঃশ্বাস নেবে গভীরভাবে। পড়ার চেয়ার আরামদায়ক হতে হবে, তবে তা যেন অতিরিক্ত আরামদায়ক না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সুখ স্বপ্ন এবং পড়া একসঙ্গে নয়: মনআচ্ছন্ন করে আছে নানা সুখ স্বপ্ন কিংবা কোন দুঃস্বপ্ন কিংবা কোন ঘটনাবলি—আর মুখে উচ্চারিত হচ্ছে যথারীতি পাঠমালা, এমন পড়া মোটেই কার্যকর হবে না, কেননা এ সময় একই সঙ্গে মস্তিষ্ক কাজ করবে, নানা বিষয় নিয়ে।
পড়াশোনায় মনোযোগ কীভাব বাড়ানো যায়—তা নিয়েও পরিচালিত হয়েছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর গবেষণা। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলোই কাজে লাগায় স্টাডি-কাউন্সেলিং সেন্টারগুলো।
পড়াশোনায় মনোযোগ যারা বাড়াতে চাও, তাদের প্রথমেই স্বীকার করে নিতে হবে কিছু ত্যাগ ও দায়-দায়িত্ব। এটা স্বীকার করে নিতে হবে, তোমাদের অগ্রজেরা যারা কর্মজীবনে নানা দায়-দায়িত্ব পালন করছে নিষ্ঠার সঙ্গে, তেমনি শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাকেও পালন করতে হবে পড়াশোনার দায়িত্ব। কারণ এটাই তোমার মূল কাজ বা পেশা।
প্রকৃত মনোযোগ না দিয়ে যদি তোমার বইয়ের বাক্যগুলো একটার পর একটা পড়ে যাও, তাহলে সেগুলো কি পড়ে ঠিকমতো মনে করতে পারবে? নিশ্চয়ই নয়। এ ধরনের পড়াকে বলা হয় ক্যাজুয়াল রিডিং। ক্যাজুয়াল রিডিংয়ের মাধ্যমে পাঠ আয়ত্ত করা কঠিন। এভাবে পড়ার বিয়য়গুলো খুব সহজেই তুমি ভুলে যাবে। অথচ এ পড়ার পেছনে তোমার যে সময় ও শ্রম ব্যয় হয়েছে তা আর কখনোই ফিরে আসবে না। অধিকন্তু এ ধরনের পড়াশোনা বিরক্তিকর। মনোযোগের সাহায্যে না বুঝে পড়া সময় ও শক্তির অপচয় মাত্র।
মনোযোগের মূল রহস্য: মনোযোগ বাড়ানোর বিষয়টি কোন বড় কিংবা জটিল কৌশলগত বিষয় নয়। তুমি যদি তোমার পড়ায় মনোযোগ বাড়াতে চাও, তাহলে তোমাকে শুধু তোমার বিষয়টিকে উপভোগ্য করে তুলতে হবে। পাঠ্য বিষয়ের প্রতি তোমার আগ্রহকে বাড়াতে হবে।
আগ্রহ বাড়াবে কীভাবে: তথ্য সব সময় আকর্ষণীয় কিংবা আগ্রহ উদ্দীপক হয় না। কিন্তু অধিকাংশ পাঠ্যবই নানা তথ্যে ঠাসা। এ কারণে এসব পাঠ্যবই ছাত্রছাত্রীদের আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলে। কিন্তু এসব তথ্য তখনই আকর্ষণীয় এবং কৌতূহলোদ্দীপক হয়ে ওঠে, যখন আমরা তার মূলগত ধারণাগুলো আবিষ্কার করতে সমর্থ হই—অর্থাত্ বিষয়গুলো বুঝতে পারি। এ কারণে তুমি যদি তোমার পাঠ চর্চার সময়টুকু আগ্রহপূর্ণ ও মজাদার করে তুলতে চাও, তাহলে তোমাকে পঠিত বিষয়ের মূল ধারণাটি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। বাক্যগুলো শুধু আওড়ানো নয়, তোমাকে অনুধাবন করতে হবে। তুমি কী শিখলে, বইয়ের লেখাগুলো যা বোঝাতে চেয়েছে তা তুমি কতটা বুঝতে পারলে।
পড়া থামাবে কখন: অধিকাংশ শিক্ষার্থীই পড়া থামিয়ে দেয় যখন-তখন। কিন্তু পরিকল্পনামাফিক পাঠবিরতি পড়াশোনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু অপরিকল্পিত পাঠবিরতি পড়াশোনার ক্ষতি করে থাকে। পড়া থামিয়ে দেওয়ার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী করা হয় বাইরের নানা ঘটনাবলিকে। এ কারণে তোমাকে একটি উপযুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করতে হবে অথবা তোমার পড়ার স্থানটিকেই সেভাবে তৈরি করে নিতে হবে।
বহিরাগতদের উপস্থিতি: পড়ার সময় কারও উপস্থিতি মনকে বিক্ষিপ্ত করে তোলে। এ কারণে যতটা সম্ভব নিরিবিলিতে পড়াশোনা করতে হবে। আর যদি কারও উপস্থিতি ঘটেও তাহলে তাকে অদৃশ্য বলেই বিবেচনা করবে।
শব্দ ও সংগীত: পড়াশোনার জন্য নীরব পরিবেশই উত্তম। কেউ কেউ একেবারে নীরব পরিবেশই পছন্দ করে থাকে। টিভি রুমের শব্দ কিংবা সংগীতের মূর্ছনা মনকে অবশ্যই কিছু না কিছু বিক্ষিপ্ত করে তোলে।
বিক্ষিপ্তচিত্ততার ব্যক্তিগত কারণ: একান্ত ব্যক্তিগত কারণেও পড়াশোনার সময় চিত্ত বিক্ষিপ্ত হতে পারে। একে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে—১। শারীরিক ও (২) মানসিক। শারীরিক কারণে চিত্তের বিক্ষিপ্ততা নানাভাবে হতে পারে। সেটা হতে পারে ক্ষুধা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা কিংবা আরামহীনতার কারণে।
খুব ক্ষুধার্ত অবস্থায় পড়াশোনা করবে না। আবার অন্যদিকে পূর্ণমাত্রায় খাওয়া-দাওয়ার অব্যবহিত পরে পড়াশোনা করাও ভালো নয়। পড়াশোনায় মনোযোগের জন্য তোমাকে হাই-প্রোটিনযুক্ত অল্প বা স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। এ সময় গৃহীত পানীয় অবশ্যই নন অ্যালকোহলিক হবে। এছাড়া ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রাও হবে সীমিত।
শারীরিক ক্লান্তি নিয়ে পড়াশোনা না করে সবচেয়ে সজাগ বা চাঙ্গা সময়ে নিবিড়ভাবে পড়া উচিত। পড়াশোনা খুব ক্লান্তিকর মনে হলে একটু হাঁটাহাঁটি করবে। সামান্য হালকা ব্যায়াম করবে এবং কয়েকবার নিঃশ্বাস নেবে গভীরভাবে। পড়ার চেয়ার আরামদায়ক হতে হবে, তবে তা যেন অতিরিক্ত আরামদায়ক না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সুখ স্বপ্ন এবং পড়া একসঙ্গে নয়: মনআচ্ছন্ন করে আছে নানা সুখ স্বপ্ন কিংবা কোন দুঃস্বপ্ন কিংবা কোন ঘটনাবলি—আর মুখে উচ্চারিত হচ্ছে যথারীতি পাঠমালা, এমন পড়া মোটেই কার্যকর হবে না, কেননা এ সময় একই সঙ্গে মস্তিষ্ক কাজ করবে, নানা বিষয় নিয়ে।
No comments:
Post a Comment